Home ব্যাংক-বিমা  পুঁজিবাজারে বিমা খাতের দাপট চলছেই

 পুঁজিবাজারে বিমা খাতের দাপট চলছেই

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

দেশের পুঁজিবাজারে বিমা খাতে সুবাতাস বইছে। গত তিন মাসে ধরে এ সেক্টরের প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ছেই। প্রায়ই শেয়ার দ্বিগুণ ও কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম চার থেকে পাঁচগুণ হয়েছে। বিমা খাত  যেন টাকার খনি। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন বেশি।

বিমা খাতের দাপুটে অবস্থানের কারণে অন্য সেক্টরের শেয়ারের দামে তেমন নড়চড় নেই। রবিবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে অধিকাংশ কোম্পানি দর হারালেও বিমা খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দাম বেড়েছে।

দাম বৃদ্ধিতে  শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে আটটি ছিলো বিমা খাতের কোম্পানি।  কোম্পানিগুলো হলো নিটোল ইনস্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, নর্দান ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেটাল ইন্স্যুরেন্স,  গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স ও তাকাফূল ইন্স্যুরেন্স।  রবিবার  লেনদেন হওয়া বিমা খাতের ৪৮ কোম্পানির মধ্যে ৩৬টির দাম বেড়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমা খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ  তৈরি হয়েছে। অনেকেই এ খাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। বিমা খাতের কোম্পানিগুলো স্বল্প মূলধনের। তার ওপর এ খাতের কোম্পানিতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করা হলে তাতে বাজারে শেয়ারের সংকট তৈরি হয়। সহজেই দাম বৃদ্ধি পায়। কয়েক মাসে বিমা খাতের কয়েকটি  শেয়ারের দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেড়েছে। চারমাসে আগে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের দাম ছিল ৪০ টাকা, বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ১৬০ টাকায়। এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স তিনমাসে আগে দর ছিল ২০ টাকা, বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৬৯ টাকায়। কন্টিন্টোল ইন্স্যুরেন্স একই সময়ে দাম ছিল ২১ টাকা বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৬১ টাকায়। প্রতিটি বিমা খাতের শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

কয়েকটি সূত্র জানায়, বিমার শেয়ারদর বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো বিমা কোম্পানির উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ, পলিসির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কমিশন ১৫ শতাংশ কার্যকর হওয়ায় কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধি, সরকারি নানা নীতি পরিকল্পনার কারণে ব্যবসা বৃদ্ধির সম্ভাবনা ইত্যাদি। এছাড়া পরিচালকের পদ ধরে রাখতে অনেক কোম্পানির পরিচালকরা শেয়ার কিনেছেন।  ২ শতাংশ শেয়ার না থাকায় কয়েকটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালকরা পদ হারিয়েছেন।

আরও গুঞ্জন আছে, থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স বাতিলের পর মোটরযানের ক্ষেত্রে বিমা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এতে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর ব্যবসা বাড়বে। একই সঙ্গে ভবন তৈরিতে বিমা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে সরকারি নীতি এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন বিমা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে- এমন গুঞ্জনে এ খাতের শেয়ারদর খুব অল্প সময়ে বেড়েছে।

এসব ইস্যুকে পুঁজি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি কিছু কারসাজি চক্রও বিমার শেয়ারে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে। এরপর সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে শেয়ারদর রাতারাতি বাড়াতে থাকে। ক্রমাগত দর বাড়তে দেখে মুনাফার আশায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও অন্য শেয়ার বিক্রি করে বিমার শেয়ার কিনতে শুরু করে। এতে অন্য খাতের শেয়ার চাহিদা কমছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়বে আবার কমবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন রকম কারণ ছাড়াই কোন কোম্পানির শেয়ার দর হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়াটার মানে অন্য কিছু বুঝায়। নিশ্চয় এ কোম্পানিটিতে কারসাজি চক্র সক্রিয় রয়েছে।