Home আন্তর্জাতিক সৌদি আরবে অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় ফিলিপাইনের যমজ কন্যা

সৌদি আরবে অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় ফিলিপাইনের যমজ কন্যা

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফিলিপাইনের যমজ কন্যা ক্লিয়া অ্যান এবং মরিস অ্যান মিসা শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এসে পৌঁছেছে এবং বর্তমানে তাদের সম্ভাব্য অস্ত্রোপচার মূল্যায়নের প্রক্রিয়া চলছে। সৌদি কনজয়েন্ড টুইনস প্রোগ্রামের অধীনে এ অস্ত্রোপচার পরিচালিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ)।

যমজ দু’জনকে তাদের মা-বাবার সঙ্গে সৌদি বাদশাহ সালমানের বিশেষ নির্দেশে ফিলিপাইনের ম্যানিলা থেকে আনা হয়। রিয়াদের কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাদের সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় কিং আবদুল্লাহ স্পেশালিস্ট চিলড্রেন’স হাসপাতালে, যা ন্যাশনাল গার্ডের অধীন পরিচালিত হচ্ছে।

এটি হচ্ছে ফিলিপাইনের তৃতীয় যমজ শিশুর ঘটনা, যারা সৌদি সরকারের এ বিশেষ চিকিৎসা উদ্যোগের আওতায় আসছে। এর আগেও দুইবার ফিলিপাইনের জোড়া যমজ শিশুদের সফল অস্ত্রোপচার করা হয় এ কর্মসূচির মাধ্যমে।

অস্ত্রোপচার দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. আবদুল্লাহ আল-রাবিয়া, যিনি সৌদি রাজপ্রাসাদের উপদেষ্টা এবং কিং সালমান হিউম্যানিটারিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফ সেন্টারের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

ক্লিয়া ও মরিসার মা মারিসেল মিসা জানান, তার সন্তানেরা জন্মগ্রহণ করার পর থেকেই তিনি প্রার্থনা করে আসছিলেন যেন কখনও কেউ এগিয়ে এসে তাদের একটি স্বাভাবিক জীবনের সুযোগ করে দেয়। সাত বছর পর সেই প্রার্থনার জবাব এসেছে সৌদি আরব থেকে।

মারিসেল বলেন, “আমরা একটি পোস্টে দেখি, সৌদিতে আগে একজন ফিলিপাইনির যমজ সন্তানের অস্ত্রোপচার হয়েছে। আমি সেখানে মন্তব্য করে লিখেছিলাম, যদি আমাদেরও কেউ সাহায্য করত! এরপর একজন ব্যক্তি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে।”

লুবাং দ্বীপের বাসিন্দা মারিসেল ও তার স্বামী একটি ক্ষুদ্র দোকান চালান। তাদের পক্ষে এত ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচার করা সম্ভব ছিল না। সৌদি দূতাবাস থেকে ফোন আসার পরই তাদের জীবনে নতুন আশার আলো আসে।

১৯৯০ সালে চালু হওয়া সৌদি কনজয়েন্ড টুইনস প্রোগ্রাম এখন পর্যন্ত ১৪০টিরও বেশি শিশু যমজকে সফলভাবে পৃথক করেছে, যাদের শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গ একত্র ছিল। ২০০৪ সালে ফিলিপাইনের অ্যান ও মে মানজ নামের যমজ কন্যা, যাদের পেট ও শ্রোণী একত্র ছিল, তাদের পৃথক করেছিলেন ড. রাবিয়া ও তার দল।
এরপর ২০২৪ সালে দ্বিতীয় দফায় আখিজা ও আয়েশা ইউসুফ নামের যমজ কন্যাকে সফলভাবে পৃথক করা হয়।

ড. রাবিয়া বলেন, “এই কর্মসূচি সৌদি আরবের করুণা ও মানবিক সংহতির মূলনীতিকে প্রতিফলিত করে—যেখানে জাতি, ধর্ম বা বর্ণ কোনো বাধা নয়।”