Home আন্তর্জাতিক মিয়ানমারে ভোট: গণতন্ত্রের পথে ফেরা নাকি সামরিক বৈধতার লড়াই?

মিয়ানমারে ভোট: গণতন্ত্রের পথে ফেরা নাকি সামরিক বৈধতার লড়াই?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি এক রক্তাক্ত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার প্রায় পাঁচ বছর পর, আজ রোববার প্রথম জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে মিয়ানমারের নাগরিকরা। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও, দেশটির বিশাল একটি অংশ এখনো গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে কড়া সামরিক পাহারায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডো এবং বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনে জান্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে রাখাইন, কাচিন এবং কারেন রাজ্যের মতো বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। জান্তা সরকার জানিয়েছে, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে দেশটির ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় আজ প্রথম ধাপে ভোট নেওয়া হচ্ছে।

২০২০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়া অং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি’ এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বর্জন করেছে। দলটিকে আগেই বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জান্তা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্বাচনে জান্তা সমর্থিত ‘ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’ বিনা চ্যালেঞ্জে জয়লাভ করতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিরোধী মতকে দমন করে এবং রাজনৈতিক বন্দিদের কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। তবে জান্তা সরকারের দাবি, এই নির্বাচনের মাধ্যমেই তারা জনগণের হাতে পুনরায় ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায়।

নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এবং পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূ-রাজনীতি অনেকাংশেই নির্ভর করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মিয়ানমারের এই রাজনৈতিক পরিবর্তন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় নতুন কোনো মাত্রা যোগ করে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়