শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসে লক্ষ্মীবারে লক্ষ্মীলাভ। এক টিকিটে কোটিপতি ময়নাগুড়ির ভ্যানচালক।
দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের টেকাটুলি থেকে জলপাইগুড়ি পুলিশ লাইন এলাকায় এসে এক ভ্যান মালিকের থেকে ভ্যান নিয়ে চালান সুবোধ রায়। দুই ছেলেমেয়ে-সহ মোট পাঁচ জনের সংসার কোনওমতে চালান সেই রোজগারে। জলপাইগুড়ি পুলিশ লাইন এলাকাতে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি না ফিরে থেকে গিয়েছিলেন সেখানে।
বিকেলে ঘুরতে ঘুরতে চলে আসেন রেসকোর্স পাড়ার বাজার এলাকায়। সেখানে সমীর লামার দোকান থেকে ৬০ টাকা দিয়ে নাগাল্যান্ড ইভিনিং লটারির একটি টিকিট কাটেন সুবোধবাবু। পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার সকালে নম্বর মেলাতে গিয়ে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ। দেখেন ১ কোটি টাকার প্রথম পুরষ্কার জিতেছেন তিনি। পুলিশ লাইনের লটারি কাউন্টার থেকে ১ কোটি টাকা প্রাইজ জেতার খবর ছড়িয়ে যায় মুহূর্তে। কে পেয়েছে জানতে দোকানে ভিড় জমার সঙ্গে সঙ্গে আস্তে করে এলাকা ছাড়েন সুবোধ রায়।
ঘটনার আকস্মিকতায় তখন তিনি থমকে। দিনভর চুপচাপই ছিলেন। ভ্যান মালিক ফোন করে কাজে যেতে বললে যাননি। তাঁর কথায়, “সারাদিন শুধু চিন্তা করেছি। এরপর রাতে শ্বশুরবাড়িতে সব খুলে বলি। শনিবার সকাল হতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও লটারি বিক্রেতাকে সঙ্গে নিয়ে কোতোয়ালি থানায় টিকিট জমা করি।”
হতদরিদ্র ভ্যানচালক তিনি। হঠাৎ পাওয়া এত টাকা নিয়ে কী করবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে সুবোধবাবুর ঝটিতি জবাব, “পুরোটাই ফিক্সড করে রাখব।”
লটারি বিক্রেতা সমীর লামা বলেন, “গত ১০ বছর ধরে লটারির টিকিট বিক্রি করে আসছি। প্রচুর প্রাইজ হয়েছে আমার দোকান থেকে। এর আগে আমার কাউন্টার থেকে ৯ লাখ টাকা প্রাইজ হয়েছিল। কিন্তু ১ কোটি টাকা এই প্রথম। গরীব ভ্যানচালক এই টাকা পাওয়ায় আমার খুব ভালো লাগছে।”
জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান লটারির টিকিট কাটার পর ওই ভ্যানচালক তাঁদের কাছে আসেন। তাই প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।