বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
একটা সময় ছিল, যখন বাজারে গিয়ে পছন্দের পণ্য খুঁজে নিতে হতো। এখন সে দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। তরুণরা এখন স্মার্টফোনের পর্দায় চোখ রেখে খুঁজে নেয় তাদের নতুন পছন্দ, ভালোবাসা আর বিশ্বাসের ব্র্যান্ড। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, ডিজিটাল দুনিয়া।
আজকের তরুণদের সকাল শুরু হয় মোবাইল ঘেঁটে, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগ মুহূর্তেও চোখ থাকে স্ক্রিনে। তাদের জীবনের বড় একটা অংশ ঘুরে বেড়ায় ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টিকটক বা ই-কমার্স অ্যাপে। আর এখানেই ব্র্যান্ডগুলো তাদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হয়ে উঠছে।
তরুণরা আর বিজ্ঞাপনের বড় বড় স্লোগানে প্রভাবিত হয় না। তারা খোঁজে বাস্তব অভিজ্ঞতা, প্রামাণ্য রিভিউ, ইনফ্লুয়েন্সারের পরামর্শ, আর বন্ধুর প্রোফাইলে দেখা কোনো ভিডিও। তারা বিশ্বাস করে সেই ব্র্যান্ডে, যা তাদের সঙ্গে নিজের মতো করে কথা বলে খোলামেলা, আন্তরিক আর বাস্তব।
নুসরাত, এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানায়, “আমি কোনো পণ্য কেনার আগে ইউটিউবে রিভিউ দেখি। দেখি কাদের ব্যবহার অভিজ্ঞতা কেমন। যারা আমার বয়সী, তাদের মতামতই আমার সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে।”
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তরুণরা শুধু ব্র্যান্ড দেখে না, তারা তাদের সঙ্গে যুক্তও থাকে। কমেন্ট করে, প্রশ্ন করে, মতামত দেয়। অনেক সময় ব্র্যান্ডগুলো সেই মতামতের উত্তর দেয়, কখনও আবার তরুণদের কনটেন্ট শেয়ার করে। এতে তরুণরা ব্র্যান্ডকে নিজের মত করে কাছে পায়, ব্যক্তিগত সম্পর্কের মতো অনুভব করে।
অনেক তরুণ আজ নিজেই ছোটখাটো ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ হয়ে ওঠে, যারা নিজের প্রোফাইলে ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহার করে ভিডিও বানায়, ফটো পোস্ট করে। এর মাধ্যমে শুধু ব্র্যান্ডের প্রচার হয় না, তৈরি হয় বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা লয়ালটি।
ডিজিটাল দুনিয়া তরুণদের দিয়েছে পছন্দের স্বাধীনতা। তারা এখন আর ব্র্যান্ডের মুখাপেক্ষী নয়, বরং নিজের হাতে বেছে নিচ্ছে কোন ব্র্যান্ডকে বিশ্বাস করবে, কোনটাকে নয়। এবং এই স্বাধীন বাছাই যখন একটা ভালো অভিজ্ঞতা দেয়, তখন সেটাই গেঁথে বসে যায় মনে — জন্ম নেয় ডিজিটাল যুগের এক নতুন লয়ালটি।
তরুণদের জন্য আজ ব্র্যান্ড মানে একটা ওয়েবসাইট বা বিজ্ঞাপন নয়, সেটা হলো একটা অভিজ্ঞতা, একটা সম্পর্ক — যা গড়ে ওঠে স্ক্রিনের আলোয়, কিন্তু থেকে যায় মনে।
পরবর্তী পর্বে থাকবে:
“ভবিষ্যতের তরুণ ও ব্র্যান্ড – স্বপ্নের পথে”
তরুণরা কিভাবে ব্র্যান্ডের সাহায্যে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চায় এবং ভবিষ্যতের সাথে সেই সম্পর্ক কেমন হতে পারে, তা নিয়েই পরবর্তী পর্ব।