বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: এক দীর্ঘ রাজনৈতিক নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে আজ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে দেশের মাটিতে পা রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ২০০৮ সালে দেশ ছাড়ার দীর্ঘ ১৭ বছর পর তাঁর এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা এখন উৎসব ও উত্তেজনার নগরীতে পরিণত হয়েছে।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে গত রাতে (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। ফ্লাইটটি সিলেটে এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি দিয়ে আজ দুপুর ১১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং কন্যা জাইমা রহমান।
তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। বিএনপি থেকেও তাদের নিজস্ব ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ মোতায়েন করা হয়েছে।

ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ বিমানবন্দর এলাকায় সমবেত হতে শুরু করেছেন। বিমানবন্দরের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে উত্তরার ৩০০ ফিট (জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে) এলাকা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ব্যানার, ফেস্টুন আর তোরণে ছেয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মুখে ‘রাজপুত্রের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজপথ।
বিএনপি সূত্রে জানানো হয়েছে, তারেক রহমান জনসাধারণের ভোগান্তি এড়াতে বড় কোনো আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা না নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। তবে তাঁর প্রাথমিক কর্মসূচিগুলো হলো:
- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতারা তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন।
- ৩০০ ফিট (জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে) এলাকায় অপেক্ষমাণ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি একটি সংক্ষিপ্ত কৃতজ্ঞতামূলক বক্তব্য দেবেন।
- সেখান থেকে সরাসরি তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তাঁর অসুস্থ মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার জন্য।
- মায়ের সাথে দেখা করে তিনি গুলশান-২ নম্বরে তাঁর বাসভবনে ফিরে যাবেন।
আগামীকাল ২৬ ডিসেম্বর তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। ২৭ ডিসেম্বর তিনি নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হবেন।
তারেক রহমানের এই ফিরে আসাকে বিশ্লেষকরা দেখছেন বাংলাদেশের আগামীর রাজনীতির এক সন্ধিক্ষণ হিসেবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর এই প্রত্যাবর্তন বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে। শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।










