Home আন্তর্জাতিক ওয়াঘা সীমান্তে ফের বিটিং রিট্রিট প্যারেড শুরু করল ভারত, বন্ধ থাকল গেট...

ওয়াঘা সীমান্তে ফের বিটিং রিট্রিট প্যারেড শুরু করল ভারত, বন্ধ থাকল গেট ও করমর্দন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ১২ দিনের বিরতির পর ওয়াঘা-আটারি সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সোমবার ফের শুরু করেছে ঐতিহ্যবাহী বিটিং রিট্রিট প্যারেড। যদিও প্রতিদিনের মতো সোমবার সন্ধ্যায় দুই দেশের রীতিগত কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সীমান্তের মূল গেটটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধই ছিল এবং দুই পক্ষের জওয়ানদের মধ্যে কোনো করমর্দনের দৃশ্য দেখা যায়নি।

ভারতের বিএসএফ ৭ মে প্যারেড স্থগিত করেছিল। এ সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে তখন জানানো হয়েছিল, সীমান্তে সাময়িক উত্তেজনা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির মূল্যায়নের জন্য সাময়িক বিরতি প্রয়োজন। যদিও পাকিস্তানি পক্ষ পাঞ্জাব রেঞ্জার্স এই সময়েও প্রতিদিন তাদের পক্ষ থেকে নির্ধারিত কুচকাওয়াজ ও জাতীয় পতাকা নামানোর আনুষ্ঠানিকতা চালিয়ে গেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ৭ মে’র পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরেই সামরিক তৎপরতা ও কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিশেষত কাশ্মীর সীমান্তে সেনা মোতায়েন ও যুদ্ধবিমান চলাচলের গতি বৃদ্ধির পর সন্দেহ দেখা দেয়, দুই দেশের মধ্যে পুনরায় সীমান্ত উত্তেজনা চরমে উঠছে কি না। এরই মধ্যে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হঠাৎ করে ওয়াঘা সীমান্তে প্যারেড স্থগিত করে।

সাধারণত ওয়াঘা সীমান্তে প্রতিদিনের প্যারেড শেষে দুই দেশের জওয়ানদের মধ্যে প্রতীকী করমর্দন হয়, যা দুই দেশের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু সোমবার (২০ মে) গেট খোলা হয়নি এবং দুই পক্ষের কেউই একে অপরের দিকে এগিয়ে যাননি। এতে স্পষ্ট হয়েছে, কৌশলগত সৌজন্য বজায় রাখলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনো ঠান্ডা ও অবিশ্বাসের মধ্যেই রয়ে গেছে।

ওয়াঘা-আটারি সীমান্তে বিটিং রিট্রিট প্যারেড শুরু হয় ১৯৫৯ সালে। তখন থেকেই এটি দুই দেশের জাতীয় গর্ব, সামরিক শৃঙ্খলা ও শক্তিমত্তার এক প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় অসংখ্য দর্শনার্থী সীমান্ত এলাকায় জড়ো হন এই মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ দেখতে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক ও সামরিক টানাপোড়েনের কারণে একাধিকবার প্যারেড বন্ধ হয়েছে বা সীমিত পরিসরে হয়েছে।

পাকিস্তানি নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে. জেনারেল (অব.) তালাত মাসউদ এক বিবৃতিতে বলেন, “প্যারেড শুরু হলেও মূল গেট বন্ধ থাকা ও করমর্দন না হওয়া এটাই প্রমাণ করে যে সম্পর্ক এখনো স্বাভাবিক হয়নি। বরং এটিকে আমরা প্রতীকী দূরত্ব হিসেবেও ব্যাখ্যা করতে পারি।”

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা বা শান্তি প্রক্রিয়া এখন পুরোপুরি স্থবির। দুই দেশেই বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চলমান থাকায় কূটনৈতিক স্তরে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। তবে সীমান্তে প্রতিদিনের এই প্যারেড চালু থাকলে অন্তত সীমিত মাত্রায় হলেও সামরিক সৌজন্য ও নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।