বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা :’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুলের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস এবং এর সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যোগসূত্র খতিয়ে দেখতে মানিলন্ডারিং আইনে পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডি জানায়, মূল অভিযুক্ত ফয়সাল এখনো পলাতক থাকলেও তার পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়। এসব চেকবই পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ফয়সাল ও তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে।
প্রাথমিক বিশ্লেষণে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া আরও ২১৮ কোটি টাকার চেক সংক্রান্ত রেকর্ড পাওয়া গেছে, যা এখনো চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন হয়নি। সিআইডির ধারণা, এই বিপুল অর্থ কোনো সংঘবদ্ধ অপরাধ বা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ অনুযায়ী সিআইডি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। অভিযুক্তদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা দ্রুততম সময়ে বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই অর্থের মূল যোগানদাতা এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করতে সিআইডির একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।
গত ১২ই ডিসেম্বর দুপুরে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ঘটনার পর থেকেই সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং ঘাতকের ব্যবহৃত গুলির খোসাসহ বিভিন্ন আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সিআইডি বলছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো শক্তিশালী নেটওয়ার্ক, সুপরিকল্পিত অর্থায়ন বা অস্ত্র সরবরাহের কোনো আন্তর্জাতিক বা অভ্যন্তরীণ চক্র সক্রিয় ছিল কি না, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হাদি হত্যাকাণ্ডের আলামত গোপন এবং অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে ইতিমধ্যে ফয়সালের বেশ কয়েকজন স্বজন ও সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মূল অভিযুক্ত ফয়সালকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।










