বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে নতুন করে শুরু হওয়া ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের মামলায় সাক্ষ্য দিলেন সাবেক সহকারী মিরিয়াম হ্যালেই। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে হ্যালেই জানান, “ও আমাকে অপমান করেছিল, ছোট করে দিয়েছিল। সে দিনের স্মৃতি আজও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে।”
২০০৬ সালের ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে হ্যালেই বলেন, ওয়াইনস্টিন তাকে একাধিকবার ম্যাসাজ ও যৌনসঙ্গমের প্রস্তাব দেন। একদিন একা একটি অ্যাপার্টমেন্টে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক মুখমেহন করান — হ্যালেইয়ের বারবার ‘না’ বলা সত্ত্বেও।
২০২০ সালের মামলায় এই সাক্ষ্যই ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। যদিও নিউ ইয়র্ক আপিল আদালত সেই রায় বাতিল করে নতুন বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।
আদালতের শুনানির প্রথম দিনেই অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি শ্যানন লুসি বলেন, “ও তিনজন নারীর জীবন ধ্বংস করে দিয়েছিল। সবাই তাকে থামাতে বলেছিল, কিন্তু ওয়াইনস্টিন জানত, ক্ষমতা তার হাতে।”
ওয়াইনস্টিনের বিরুদ্ধে মামলার আওতায় আনা হয়েছে ২০০৬ সালে হ্যালেইকে যৌন নিপীড়ন, ২০১৩ সালে অভিনেত্রী জেসিকা মানকে ধর্ষণ এবং আরেক ১৯ বছর বয়সী তরুণীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ।
হ্যালেইয়ের আইনজীবী গ্লোরিয়া অলরেড বলেন, “নিজের কষ্টের কথা আবারও প্রকাশ্যে তুলে ধরা তার জন্য বিশাল মানসিক বলিদান। কিন্তু সে এটি করছে একমাত্র ন্যায়বিচারের জন্য। আমি তার সাহসিকতায় গর্বিত।”
৭৩ বছর বয়সী ওয়াইনস্টিন বর্তমানে হুইলচেয়ারে বসা একজন অসুস্থ বন্দি। ইতোমধ্যেই তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার আরেক মামলায় ১৬ বছরের সাজা ভোগ করছেন। তার আইনজীবী আর্থার এইডালা দাবি করেছেন, “জুরি কোনও জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক বা অনিচ্ছার প্রমাণ শুনবে না। সম্পর্কগুলো ছিল সম্মতিতে।”
তবে প্রসিকিউশন বলছে, ওয়াইনস্টিন তার প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নারীদের নিপীড়ন করতেন — হোটেলের ঘরগুলোই ছিল তার শিকারের ক্ষেত্র।
পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ ধরে চলবে এই পুনর্বিচার। হ্যালেই আরও একদিন সাক্ষ্য দেবেন।
ওয়াইনস্টিনের মন্তব্য, তিনি আশা করেন “নতুন চোখে” বিচার হবে। যদিও এখনও তিনি কোনও অভিযোগ স্বীকার করেননি।