Home শিক্ষা ডুসেলডর্ফ: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার এক সোনালী সুযোগ

ডুসেলডর্ফ: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার এক সোনালী সুযোগ

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ডুসেলডর্ফ জার্মানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র। আজকাল অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর জন্য নতুন সম্ভাবনা এবং উন্নতির এক দরজা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। শহরটির উজ্জ্বল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, আন্তর্জাতিক শিক্ষার মান এবং কম খরচে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করছে।

ডুসেলডর্ফে অবস্থান করা দুটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়, হেনরিক হাইন বিশ্ববিদ্যালয় (HHU) এবং ফাচহোচশুলে ডুসেলডর্ফ (HSD), আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে হেনরিক হাইন বিশ্ববিদ্যালয়টি জার্মানির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি এবং এখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম রয়েছে যা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। তাছাড়া, ডুসেলডর্ফে শিক্ষা গ্রহণের খরচ তুলনামূলকভাবে কম, যা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

ডুসেলডর্ফের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোর্স এবং ডিগ্রি প্রোগ্রাম রয়েছে যা বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য আদর্শ, যেমন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ব্যবসা, এবং সামাজিক বিজ্ঞান। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণত ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসা প্রশাসন, তথ্য প্রযুক্তি, এবং মেডিকেল সায়েন্সের মতো বিষয়গুলোতে পড়াশোনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বহুল পরিচিত প্রোগ্রামগুলো যেমন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়।

ডুসেলডর্ফ শুধুমাত্র শিক্ষার জন্যই নয়, বরং কর্মসংস্থানের সুযোগেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি শহর। জার্মানির অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে ডুসেলডর্ফে বহুজাতিক কোম্পানির অফিস রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ এবং কাজের সুযোগ প্রদান করে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষে এখানকার শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরিবেশে কাজে যোগদান করতে সক্ষম হচ্ছেন। এমনকি, জার্মানির শিক্ষা নীতি অনুসারে, বিদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা শেষ করার পর এক বছর চাকরি খোঁজার জন্য দেশে থাকার অনুমতি পায়, যা তাদের ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করে।

ডুসেলডর্ফ শহরটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্যপূর্ণ এক জায়গা, যেখানে বিভিন্ন দেশের মানুষ একত্রে বসবাস এবং কাজ করে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এই শহরে এসে শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষা অর্জন করছে না, বরং তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করছে। শহরের ‘লিটল টোকিও’ এলাকায় জাপানি, কোরিয়ান, চাইনিজ এবং অন্যান্য দেশের খাবার, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মিশে এক দারুণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ডুসেলডর্ফে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির পরিচয় বজায় রেখে একটি বৈশ্বিক পরিবেশে বসবাস করছে।

জার্মানিতে শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি স্কলারশিপ এবং অন্যান্য সহায়তার সুযোগ রয়েছে, যার মধ্যে DAAD (ডি.এ.এ.ডি.) স্কলারশিপ অন্যতম। এই স্কলারশিপগুলি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা তাদের খরচ কমিয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি না থাকা সত্ত্বেও, শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি এবং থাকা-খাওয়ার খরচ মেটানোর জন্য স্কলারশিপগুলির সাহায্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডুসেলডর্ফের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, এবং এটির সঙ্গে সঙ্গে তাদের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা এবং ক্যারিয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। এছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তাদের ভবিষ্যতকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এই শহরটি একটি শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে, যেখানে তারা শুধু উচ্চশিক্ষার সুযোগই পাচ্ছে না, বরং একটি বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারছে।