বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ইঙ্গিত মিললেও নির্বাচনমুখী কৌশল আপাতত স্থগিত রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি এখন সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় করা এবং সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেই বেশি মনোযোগী হয়ে উঠেছে।
দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, তাদের মূল লক্ষ্য এখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে গণআন্দোলন জোরদার করা। এই দাবিকে সামনে রেখে বিভাগীয় শহর এবং জেলা পর্যায়ে দলীয় কাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এনসিপি।
দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “জুলাইয়ের রাজনৈতিক পালাবদলের এতদিন পরও সরকার দৃশ্যমানভাবে কোনো বিচারিক বা সাংগঠনিক উদ্যোগ নেয়নি। আমাদের জন্য এটাই সবচেয়ে হতাশার। ফলে আমরা এখন নির্বাচনের চেয়ে বিচার ও নিষিদ্ধকরণের দাবিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”
এনসিপির সূত্রে জানা গেছে, ঈদের সময়কালে অনেক নেতা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ করলেও ঈদ-পরবর্তী সময়ে সে ধারা ধরে রাখা যায়নি। স্থানীয় পর্যায়ে প্রত্যাশিত সাড়া না মেলায় অনেকেই রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় এখন নির্বাচন নয়, সংগঠনকে শক্তিশালী করাই মূল লক্ষ্য।
এদিকে নির্বাচন কমিশনে দলীয় নিবন্ধনের প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে। এনসিপি নিবন্ধনের শর্ত পূরণে অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছিল। ইসি তিন মাস না বাড়িয়ে অতিরিক্ত দুই মাস সময় দিয়েছে। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, “আমরা সংস্কারমূলক নির্বাচন চাই। মৌলিক কাঠামো পুনর্গঠন ছাড়া নির্বাচন অর্থবহ হবে না।”
দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সরকার এখনো একটি অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। তিনি জানান, প্রবাসী ভোট, নতুন ভোটার তালিকা, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতির জন্য আরও সময় প্রয়োজন। ফলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব নয় বলেই মনে করছে দলটি।
বর্তমানে এনসিপি বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন, প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও বর্ধিত সভা আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে। নেতৃত্ব চায় আগামী বছরের প্রথম ভাগজুড়ে এই সাংগঠনিক প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে, যাতে ভবিষ্যতের যেকোনো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দল সক্রিয় ও প্রস্তুত থাকতে পারে।