প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনটি দ্রুত গতিতে কুলাউড়ার দিকে এগিয়ে আসছিল। এ সময় চালক দূর থেকে বাঁকা রেললাইন দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইমারজেন্সি ব্রেক করেন। এতে ট্রেনটি থেমে যায় এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। চালকের এই দ্রুত সিদ্ধান্তকে স্থানীয়রা ‘বীরোচিত’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
খবর পেয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে রেলকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারকাজে অংশ নেন। সবাই মিলে বাঁকা রেললাইন অংশে পানি, কাদা ও কচুরিপানা দিয়ে শীতল রাখার চেষ্টা করেন, যাতে রেলপথ আবার কার্যকর অবস্থায় ফিরে আসে। প্রায় ৩০ মিনিট পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ট্রেনটি ধীরগতিতে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অতিক্রম করে সিলেটের দিকে রওনা দেয়।
কেন গরমে রেললাইন বাঁকে যায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচণ্ড গরমে রেললাইনের ধাতব অংশ প্রসারিত হয়ে যায়। স্টিল বা লোহার তৈরি রেললাইন যখন প্রচণ্ড তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসে, তখন তাপ সম্প্রসারণ (thermal expansion) ঘটে। এতে রেললাইন সোজা থাকার পরিবর্তে চাপ সৃষ্টি হয়ে বেঁকে যেতে পারে, যাকে বলা হয় ‘সান কিঙ্ক’ বা ‘হিট বাক’।
এই ধরনের বাঁকানো রেললাইন ট্রেন চলাচলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। উচ্চ গতিতে এমন লাইনে ট্রেন উঠলে বড় ধরনের লাইনচ্যুতি বা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গ্রীষ্মের সময় এই ঝুঁকি বাড়ে, বিশেষত যেসব এলাকায় রেলপথ খোলা জায়গায় এবং পর্যাপ্ত ছায়াবিহীন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা গ্রীষ্মকালে নিয়মিত রেললাইন পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। তবে হঠাৎ করে অতিরিক্ত গরমের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। তারা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ করণীয়:
এই ঘটনার পর লংলা রেলস্টেশন এলাকায় বাড়তি নজরদারি ও পর্যবেক্ষণ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, রেলপথের পাশে নিয়মিত পানি ছিটানো, গাছ লাগানো ও তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করলে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ খবর তাৎক্ষণিক জানতে ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন বিজনেসটুডে২৪.কম। আপনার মতামত, অভিজ্ঞতা বা ঘটনার ভিডিও/ছবি থাকলে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
📩 আমাদের মেইল করুন: news@businesstoday24.com
📲 ফলো করুন ফেসবুকে: facebook.com/businesstoday24
🔗 প্রতিবেদনটি শেয়ার করে অন্যদের সতর্ক করুন।
আপনিও কি কখনো এমন কোনো বিপজ্জনক মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন?
কমেন্টে লিখুন বা আমাদের ইনবক্সে জানান। আপনার গল্প প্রকাশিত হতে পারে আমাদের বিশেষ প্রতিবেদনে।