বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটে জুলাইযোদ্ধা ইসমাইল উদ্দিনকে চায়ের দোকান খোলা নিয়ে পুলিশের এক সদস্য মারধর করে গুরুতর আহত করেছেন। ঘটনা ঘটেছে শনিবার (২১ জুন) ভোরবেলা নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্ট এলাকায়। আহত ইসমাইল বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
জানা গেছে, ইসমাইল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে জীবন-জীবিকার তাগিদে নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্টে একটি ভাসমান চায়ের দোকান চালান। এর আগে তিনি সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে উঠলেও শারীরিক কারণে অটোরিকশা চালাতে পারেন না, তাই চায়ের দোকান চালাচ্ছেন।
শনিবার ভোরবেলা দোকান খুলে বসার কিছুক্ষণের মধ্যে লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম সঙ্গীয় ফোর্সসহ এসে বাধা প্রদান করেন। তিনি ইসমাইলকে দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং জানতে চান ‘এতো সকালে দোকান খোলা কেন’। এসময় ইসমাইল তার গেজেটভুক্ত জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিলে এসআই জসিম উত্তেজিত হয়ে ‘তুই যোদ্ধা! তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলে তাকে মারধর শুরু করেন। মারধর করে জোরপূর্বক ভ্যানে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি সংকটাপন্ন হয়। এক কনস্টেবলের হস্তক্ষেপে ইসমাইলকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে পুলিশ চলে যায়।
স্থানীয়রা আহত ইসমাইলকে উদ্ধার করে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর শরীরে মারধরের চিহ্ন স্পষ্ট রয়েছে।
এই ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা কমিটি ও জুলাইযোদ্ধাদের সহযোদ্ধারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই এসআই জসিমকে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। পাশাপাশি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
