বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও মধ্যনগর সীমান্ত পয়েন্টগুলো দিয়ে প্রতিদিনই ঢুকছে ভারতীয় নানা জাতের মাদকদ্রব্য। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মাঝে মাঝেই বড় বড় চালান জব্দ করলেও পুরোপুরি থামানো যাচ্ছে না মাদকের প্রবাহ। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে আতঙ্কে রয়েছেন স্কুল-কলেজপড়ুয়া সন্তানদের অভিভাবকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমান্তবর্তী বাজার, চায়ের দোকান, এমনকি গ্রামীণ রাস্তার পাশেও সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় মাদকের অবাধ সেবন। এতে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাধারণ মানুষ প্রায়ই মাদকসেবীদের অশ্লীল ভাষা, হুমকি ও এমনকি মারধরের শিকার হন।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে সুনামগঞ্জ সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় মাদক জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২২ হাজার ৯৯৫ বোতল বিদেশি মদ, ৭০০ বোতল বিয়ার, সাড়ে ২১ কেজি গাঁজা, ৪৪ হাজার ইয়াবা, সাড়ে ৪ লিটার দেশি চোলাই মদ এবং এক লাখ ১০ হাজারের বেশি প্যাকেট ভারতীয় বিড়ি। এসব মাদক বিজিবি’র টহল ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত পার করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, বিশেষ করে উঠতি বয়সী যুবসমাজের মধ্যে।
বিজিবি ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির জানান, সীমান্ত এলাকায় তাদের টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা আগের চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা প্রায় চার কোটি টাকার মাদক জব্দ করেছি। অবৈধ পাচার রোধে আমরা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করছি। বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে মাদক পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব।”

তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর ও বালিয়াঘাট বাজারে মাদকের প্রকোপ বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সবুল। তিনি বলেন, “সন্ধ্যার পর বাজারে গেলে মাতালদের মাতলামি সহ্য করতে হয়। এভাবে চললে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়বে।”
বিজিবি বিভিন্ন সময় মাদক বিক্রেতা ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবে তাদের দৌরাত্ম্য কমছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সীমান্তের ১২০ কিলোমিটার এলাকায় কড়া নজরদারির পাশাপাশি প্রয়োজন স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ।