Home সারাদেশ রাবিপ্রবিতে চাঁদার দাবিতে পাহাড়ি অস্ত্রধারীদের হামলা, আতঙ্কে শ্রমিকরা

রাবিপ্রবিতে চাঁদার দাবিতে পাহাড়ি অস্ত্রধারীদের হামলা, আতঙ্কে শ্রমিকরা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাঙামাটি: রাঙামাটির সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উন্নয়নকাজ থেকে চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত পৌনে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অস্ত্রধারী সাতজন সন্ত্রাসী প্রবেশ করে শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণকাজে নিয়োজিত ১৫ জন শ্রমিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। তারা জানায়, চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে, আর না দিলে ব্রাশ ফায়ার চালিয়ে হত্যা করা হবে। সন্ত্রাসীদের এমন হুমকিতে শ্রমিকরা তটস্থ হয়ে পড়ে এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা, তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক। তারা জানান, এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, রাঙামাটি শহরের আসামবস্তী-কাপ্তাই সড়কসংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি তিনটি সশস্ত্র সংগঠনের প্রভাব রয়েছে। সংগঠনগুলো হলো—সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস), প্রসীত বিকাশ খীসার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং এম এন লারমা গ্রুপের পিসিজেএসএস সংস্কার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সন্তু গ্রুপ, মে মাসে পিসিজেএসএস সংস্কার এবং মে-র শেষ দিকে ইউপিডিএফ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজ থেকে একাধিক দফায় চাঁদা দাবি করে। এসব দাবির কারণে একপর্যায়ে নির্মাণকাজও বন্ধ রাখতে হয়। পরে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাধ্য হয়ে চাঁদা পরিশোধ করলে কাজ আবার শুরু হয়।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদারের কারণে কিছুদিন সন্ত্রাসীরা গা ঢাকা দিলেও বৃহস্পতিবার রাতে তারা আবার হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং ১৫টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আওতায় এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় রাবিপ্রবিতে তিনতলা ভিত্তির ওপর একাডেমিক ভবন নির্মাণ করছে এমই-আরবি নামের একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক এই দুটি ভবনের কাজ চলমান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ না হলে উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হবে। দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান তারা।