Home আন্তর্জাতিক নিষিদ্ধ সম্পর্কের অন্ধকারাচ্ছন্ন গল্প, গ্রেফতার শিক্ষিকা

নিষিদ্ধ সম্পর্কের অন্ধকারাচ্ছন্ন গল্প, গ্রেফতার শিক্ষিকা

সিয়ারা পিকার্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: স্কুলের করিডোরে সুরের মূর্ছনা ছড়ানো যে শিক্ষিকা, তার বিরুদ্ধেই এবার উঠে এল এক অন্ধকারাচ্ছন্ন অভিযোগ। কানেকটিকাটের মেরিডেন শহরের মালনি হাই স্কুলের প্রাক্তন সংগীত শিক্ষিকা সিয়ারা পিকার্ড (৩৯)-এর বিরুদ্ধে এক প্রাক্তন ছাত্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর পিকার্ড মেরিডেন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডিগ্রির যৌন নিপীড়নের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের পবিত্রতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা গেছে, পিকার্ড গত আগস্ট মাসে মালনি হাই স্কুল থেকে পদত্যাগ করেন, যদিও তখন এসব অভিযোগের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। কিন্তু জেলা কর্তৃপক্ষ অভিযোগের বিষয়ে জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই মেরিডেন পুলিশ বিভাগকে অবহিত করে এবং তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। এরপর মেরিডেন পুলিশ বিভাগের বিশেষ অপরাধ ইউনিট এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এবং অবশেষে পিকার্ডকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে জানা যায়, এই সম্পর্কের শুরু হয়েছিল বহু বছর আগে, যখন অভিযোগকারী ছাত্রটি মালনি হাই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং তার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। ছাত্রটি এখন ২৫ বছর বয়সী একজন স্নাতক। সে পুলিশকে জানিয়েছে যে, পিকার্ড সেই সময় থেকেই তাকে ‘গ্রুমিং’ করতে শুরু করেন। অভিযোগ উঠেছে যে, যখন ছাত্রটি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছিল, অর্থাৎ তার বয়স যখন ১৬ ও ১৭ বছর, তখনই একাধিক যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।

ছাত্রের মর্মস্পর্শী ভাষ্য অনুযায়ী, তার পিতার মৃত্যুর পর এই সম্পর্ক আরও গভীর ও জটিল হয়ে ওঠে। সে জানিয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় পিকার্ড তাকে নিউইয়র্ক সিটিতে একটি সিম্ফনি কনসার্ট দেখতে নিয়ে যান এবং সেখানেই তাদের মধ্যে প্রথম চুম্বন বিনিময় হয়। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া টেক্সট বার্তাগুলো যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ হয়ে ওঠে। গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী, পিকার্ড ছাত্রকে সেই বিতর্কিত বার্তাগুলো মুছে ফেলতে বলেছিলেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পিকার্ড প্রথমে এই ধরনের সম্পর্ক অস্বীকার করলেও, পরে স্বীকার করেন যে, তিনি কোন ছাত্রের কথা বলছেন তা তিনি বুঝতে পারছেন। তিনি আরও স্বীকার করেন যে তাদের মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া টেক্সট বার্তাগুলো ‘নিশ্চিতভাবেই সীমা অতিক্রম করেছিল’ এবং সম্পর্কটি ‘ঠিক ছিল না’। তবে তিনি দাবি করেন, ছাত্রটি স্কুলে পড়াকালীন তাদের মধ্যে কোনো শারীরিক যৌন সম্পর্ক হয়নি। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ছাত্রটি কলেজে পড়ার সময়ই প্রথম তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক হয়। পিকার্ড আরও জানান, ২০২১ সালে ছাত্রটি তাকে জানায় যে, সে আর যোগাযোগ রাখতে চায় না, এরপরই সম্পর্কটি শেষ হয়।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ছাত্রটি তার মাকে পিকার্ডের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানায়। পিকার্ড একজন বিবাহিত নারী এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। ছাত্রের মা তাকে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে উৎসাহিত করেন। ছাত্রটি পুলিশকে জানায় যে, পিকার্ড তার সরাসরি শিক্ষক হওয়ায় সে কখনোই তাকে ‘না’ বলতে পারত না। এই ঘটনার প্রভাবে সে বর্তমানে পেশাদার থেরাপি নিচ্ছে বলেও জানিয়েছে।