বিনোদন ডেস্ক: পাকিস্তানের জনপ্রিয় টক শো ‘গুপ শাপ উইথ ফুকশিয়া’ (Gup Shup with Fuchsia)-তে হাজির হয়ে সম্প্রতি সম্পর্কের সমীকরণ এবং ব্যক্তিগত পূর্ণতা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন অভিনেত্রী মাওরা হোকেন। চলতি বছরেই সহকর্মী আমির গিলানিকে বিয়ে করা এই তারকা স্পষ্ট জানিয়েছেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে আবেগীয় স্বাধীনতা এবং নিজের আলাদা সত্তা বজায় রাখা কতটা জরুরি।
ভালোবাসা পরিপূরক, পূর্ণতাদানকারী নয়
‘আঙ্গান’ এবং ‘সাবাদ’-এর মতো জনপ্রিয় নাটকে অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত এই অভিনেত্রী মনে করেন, কাউকে ভালোবাসার আগে নিজের মধ্যে পূর্ণতা থাকা প্রয়োজন। সাক্ষাৎকারে তিনি একটি চমৎকার উপমা ব্যবহার করেন:”আমিরের সাথে দেখা হওয়ার আগেই আমি একজন মানুষ হিসেবে সম্পূর্ণ ছিলাম। ভালোবাসা এবং সমর্থন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলো হলো আইসিং বা ‘চেরি অন টপ’। আমি নিজেই একটি আস্ত কেক হতে চাই।”
মাওরার মতে, ব্যক্তিগত শখ, ক্যারিয়ারের লক্ষ্য এবং আত্মসচেতনতা—এই সবকিছুর সমন্বয়ই একজন মানুষকে পূর্ণ করে তোলে। ভালোবাসা সেখানে কেবল নতুন মাত্রা যোগ করে।
অবাস্তব প্রত্যাশার বোঝা নয়
মাওরা মনে করেন, অনেক সময় দম্পতিরা একে অপরের ওপর ‘পূর্ণতা দেওয়ার’ যে দায়িত্ব চাপিয়ে দেন, তা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। তিনি বলেন, “কাউকে সম্পূর্ণ করার ভার অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। এটি অন্যায় এবং যে ব্যক্তি আপনার সমস্ত প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করছে, তাকে এটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।” যখন কেউ মনে করে তার সুখের দায়িত্ব সঙ্গীর, তখন সেখানে তিক্ততা এবং হতাশা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ক্যারিয়ার থেকে পাওয়া শিক্ষা
মাওরা জানান, তার দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ার এবং পর্দায় ফুটিয়ে তোলা জটিল চরিত্রগুলো তাকে সম্পর্কের সীমানা (Boundaries) বুঝতে সাহায্য করেছে। অভিনয়ের মাধ্যমেই তিনি অনুভব করেছেন যে, অন্য কারো কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়ার আগে নিজের একটি শক্তিশালী ব্যক্তিগত পরিচয় থাকা কতটা আবশ্যক।
পাকিস্তানি বা দক্ষিণ এশীয় সমাজে যেখানে বিয়েকে একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হয়, সেখানে মাওরার এই বক্তব্য এক সাহসী বার্তা। তিনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন:
- নিজের প্যাশন বা শখ পূরণ করুন।
- ক্যারিয়ার বা উচ্চাকাঙ্ক্ষার পথে এগিয়ে যান।
- নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন।
তার মতে, একজন ব্যক্তি যখন নিজে সমৃদ্ধ থাকেন, তখন তার সম্পর্কও আরও শক্তিশালী হয়। সঙ্গী যখন একে অপরের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে একে অপরের পরিপূরক হন, তখনই একটি সুস্থ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মাওরা হোকেনের এই আধুনিক চিন্তাধারা সম্পর্কে আপনার কী মনে হয়? আপনি কি একমত যে সম্পর্কের আগে নিজের পূর্ণতা বেশি জরুরি?










