Home Third Lead মা-ছেলের দ্বৈত লড়াইয়ে নেপথ্যে আইনি সতর্কতা ও রাজনৈতিক কৌশল

মা-ছেলের দ্বৈত লড়াইয়ে নেপথ্যে আইনি সতর্কতা ও রাজনৈতিক কৌশল

সিলেট-২ আসনে উত্তাপ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: :সিলেট-২ (ওসমানীনগর–বিশ্বনাথ) নির্বাচনী এলাকার রাজনীতিতে আবারও আলোচনায় নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর পরিবার। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা এবং তার ছেলে আবরার ইলিয়াস।

তবে এই মা-ছেলের একই আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিষয়টি কেবল পারিবারিক লড়াই নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে বিএনপির গভীর রাজনৈতিক ও আইনি সতর্কতা।

২০১৮ সালের নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই এবারও ‘সেফটি নেট’ বা বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আবরার ইলিয়াসকে মাঠে রাখা হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেবার লুনার প্রার্থিতা উচ্চ আদালত থেকে স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়েছিল। সেই নাটকীয়তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এবার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লুনা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবরার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সিলেট-২ আসনটি বিএনপির কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। কারণ:

উত্তরাধিকার রক্ষা: ২০০১-২০০৬ মেয়াদে এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন এম ইলিয়াস আলী। তার নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলের রাজনীতিতে আবেগ ও সহমর্মিতার বড় একটি ভোটব্যাংক তৈরি হয়েছে।

বিগত নির্বাচনের শিক্ষা: গতবার লুনার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পর গণফোরামের মোকাব্বির খানকে সমর্থন দিতে বাধ্য হয়েছিল বিএনপি। এবার সেই ঝুঁকি নিতে নারাজ দলটি।

নির্বাচনের সময়রেখা একনজরে

কার্যক্রম তারিখ
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
বাছাই কার্যক্রম ৩০ ডিসেম্বর – ৪ জানুয়ারি, ২০২৬
আপিল নিষ্পত্তি ১০ জানুয়ারি – ১৮ জানুয়ারি
প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২০ জানুয়ারি
প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি
নিখোঁজ রহস্য ও আবেগ: ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানী থেকে গাড়িচালকসহ নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তার সন্ধান না মেলায় স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে ইলিয়াস পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি রয়েছে। নির্বাচনী মাঠে লুনা ও আবরার, উভয়েই এই আবেগীয় আবেদনকে কাজে লাগিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চাইছেন।

তফসিল অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেদিনই নিশ্চিত হওয়া যাবে শেষ পর্যন্ত মা-ছেলের মধ্যে কে ভোটের মাঠে টিকে থাকছেন, নাকি আইনি মারপ্যাঁচে কোনো নতুন মোড় নেবে সিলেট-২ আসনের রাজনীতি।