এনসিপি ছাড়লেন
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে বড়সড় রাজনৈতিক মোড় বদল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় এক আনুষ্ঠানিক বার্তায় তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে রাজনীতি থেকে তিনি বিদায় নিচ্ছেন না; বরং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় পরিচয়ের বাইরে গিয়ে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ডা. তাসনিম জারা তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন যে, তার রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনসেবা এবং একটি নীতিভিত্তিক ধারার সূচনা করা। কিন্তু বর্তমানে দলের জোট ভাবনা ও আসন সমঝোতার যে সমীকরণ তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে তিনি একমত হতে পারছেন না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এনসিপির সম্ভাব্য জোট নীতি এবং আদর্শিক প্রশ্নে কিছুটা নমনীয় হওয়ার আভাসই তাসনিম জারাকে এই কঠোর সিদ্ধান্তে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি মনে করছেন, দলীয় কাঠামোর ভেতর থাকলে অনেক সময় জনস্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থ বা জোটের কৌশলকে বড় করে দেখতে হয়, যা তার ব্যক্তিগত দর্শনের পরিপন্থী।
ডা. তাসনিম জারার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার সমর্থকদের একটি বড় অংশ বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। আরিফ আহমেদ (একজন তরুণ সমর্থক) বলেন: “দলীয় রাজনীতির মারপ্যাঁচে অনেক সময় সৎ মানুষরা কাজ করতে পারেন না। জারা আপুর এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে তিনি পদের চেয়ে আদর্শকে বেশি গুরুত্ব দেন। আমরা তার পাশে আছি।” মৌমিতা হাসান (অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট) মন্তব্য করেন: “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বড় কোনো দল ছাড়া নির্বাচনে জেতা কঠিন, কিন্তু তাসনিম জারার মতো জনপ্রিয় মুখ যদি স্বতন্ত্রভাবে লড়েন, তবে তা তরুণ প্রজন্মের জন্য এক নতুন বার্তা হবে।”
তবে সমালোচকদের মতে, দলীয় কাঠামো ছাড়া একটি বিশাল নির্বাচনী এলাকা সামলানো তাসনিম জারার জন্য পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ হতে পারে। সাংগঠনিক শক্তির অভাব ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
তাসনিম জারা দলটির অন্যতম পরিচিত মুখ ছিলেন। তার প্রস্থান এনসিপির জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হতে পারে, বিশেষ করে শিক্ষিত ও তরুণ ভোটারদের মাঝে দলের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার এই পদক্ষেপ প্রমাণ করবে যে—ব্যক্তিগত স্বচ্ছ ভাবমূর্তি কি দলীয় প্রতীকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হতে পারে?
ডা. তাসনিম জারার এই ‘একলা চলো’ নীতি নির্বাচনী রাজনীতিতে কতটা কার্যকর হয়, তা দেখার জন্য আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে তার এই পদত্যাগ দেশের প্রচলিত দলীয় রাজনীতির সংস্কৃতিতে একটি ভিন্নধর্মী বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।










