বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: আজ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫। শীতের স্নিগ্ধ সকালে কুয়াশার চাদর ভেদ করে উদিত সূর্য যেন বয়ে এনেছে এক পশলা শান্তির বারতা। আজ শুভ বড়দিন।
বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মতো বাংলাদেশেও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব। তবে এবারের বড়দিনের চিত্রটি কেবল আলোকসজ্জা বা কেক কাটার আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ নেই; বরং তা হয়ে উঠেছে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর এবং মানবিক মমত্ববোধের এক অনন্য উদাহরণ।
রাজধানীর গির্জাগুলোতে সকাল থেকেই ছিল পুণ্যার্থীদের ভিড়। প্রার্থনায় বারবার উচ্চারিত হয়েছে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের জয়গান। তবে এবারের আয়োজনে সবচেয়ে হৃদয়স্পর্শী দৃশ্য দেখা গেছে গির্জা প্রাঙ্গণগুলোতে। অনেক তরুণ-তরুণী নিজেদের উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে পৌঁছে গেছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে। নতুন পোশাক আর খাবারের প্যাকেট হাতে যখন একদল শিশু হাসিমুখে উৎসবে মেতে ওঠে, তখন মনে হয়—এটাই তো বড়দিনের সার্থকতা।
গির্জার ভেতরে যখন সমবেত কণ্ঠে প্রার্থনা চলছে, বাইরে তখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছে। এই যে ভেদাভেদ ভুলে মানুষকে আপন করে নেওয়ার আকুতি, এটাই যেন আজ উৎসবের মূল সুর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শহরের অভিজাত হোটেল বা আলোকোজ্জ্বল রাস্তাঘাটের জৌলুস ছাপিয়ে বড়দিনের আসল সৌন্দর্য ধরা পড়েছে পাড়া-মহল্লার সেই সব ঘরে, যেখানে সামর্থ্যবানরা প্রতিবেশী দুস্থদের জন্য বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত।
একটি ছোট্ট উপহার বা আন্তরিক একটু হাসিও যে বিষণ্ণ কোনো মুখে আলো ফুটিয়ে তুলতে পারে, আজ ২৫ ডিসেম্বরের এই প্রহরগুলো তারই সাক্ষী দিচ্ছে। শীতের এই হিমেল বাতাসেও মানুষের হৃদয়ে বইছে ভালোবাসার উষ্ণ স্রোত।
দিনটি কেবল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং মানুষে-মানুষে মিলনের এক উজ্জ্বল স্মারক হয়ে রইল। ঘৃণা আর বিভেদ ভুলে ভালোবাসার এই শিক্ষা যেন সারা বছর আমাদের পথ দেখায়, বড়দিনের এই দিনে এটাই ছিল সাধারণ মানুষের অন্তরের চাওয়া।










