১. প্রবাদটির অর্থ
‘সোনার পাথরবাটি’ বলতে বোঝায় এমন কোনো বস্তু যা বাস্তবে থাকা অসম্ভব বা যার কোনো অস্তিত্ব নেই। এটি মূলত অসম্ভব বস্তু বা অবাস্তব কল্পনা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
২. উৎপত্তি: কখন ও কিভাবে?
এই প্রবাদটির নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা সন নেই, তবে এটি বাংলার লোকজ ভাষা এবং প্রাচীন সাহিত্য থেকে উদ্ভূত। এর নামকরণের মধ্যেই এর উৎপত্তির কারণ লুকিয়ে আছে:
উপাদানের দ্বন্দ্ব: পাথর দিয়ে বাটি তৈরি হয়, আবার সোনা দিয়েও বাটি তৈরি হয়। কিন্তু ‘পাথর’ এবং ‘সোনা’ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা উপাদান। পাথর হলো খনিজ শিলা, আর সোনা হলো ধাতু।
অসম্ভব সংমিশ্রণ: বৈজ্ঞানিক বা ব্যবহারিক কোনোভাবেই পাথর সোনা হতে পারে না, আবার সোনাও পাথর হতে পারে না। তাই ‘সোনার তৈরি পাথরের বাটি’—এই কথাটি বলা মাত্রই একটি স্ববিরোধী বা হাস্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
সাহিত্যের প্রভাব: প্রাচীনকালে যখন কবিরা বা সাধারণ মানুষ অতিশয়োক্তি (বাড়িয়ে বলা) পছন্দ করতেন, তখন তারা অসম্ভব কিছু বোঝাতে এমন সব শব্দ জুড়ি দিতেন যা পরস্পরবিরোধী। সেখান থেকেই এই প্রবাদটির জন্ম।
৩. কেন এটি ব্যবহৃত হয়? (ব্যবহারের কারণ)
এই প্রবাদটি প্রধানত তিনটি কারণে ব্যবহৃত হয়:
মিথ্যা বা আজগুবি গল্প বোঝাতে: কেউ যখন এমন কোনো কথা বলে যা বিশ্বাস করা কঠিন বা একেবারেই অসম্ভব, তখন বিদ্রূপ করে বলা হয়— “তোমার কথা তো দেখছি সোনার পাথরবাটি!”
অযোগ্যতা বোঝাতে: কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো কাজ করার দাবি করে যা তার সাধ্যের বাইরে, তখন তাকে কটাক্ষ করতে এটি ব্যবহৃত হয়।
পরস্পরবিরোধী অবস্থা: যখন কোনো বর্ণনায় দুটি এমন গুণ বা বস্তুকে একসাথে করা হয় যা কখনোই এক হতে পারে না, তখন এটি ব্যবহার করা হয়।
৪. একটি বাস্তব উদাহরণ
ধরুন, কেউ বলল যে সে এমন একটি গাড়ি তৈরি করেছে যা পেট্রোল বা বিদ্যুৎ ছাড়াই শুধু বাতাসে চলে এবং যার গতি শব্দের চেয়েও বেশি, কিন্তু গাড়িটি আসলে কাঠের তৈরি। তখন মানুষ বলবে— “এ তো দেখছি সোনার পাথরবাটি গল্প!” কারণ কাঠের গাড়ি শব্দের চেয়ে দ্রুত চলা এবং কোনো জ্বালানি ছাড়া চলা অবাস্তব।
এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com










