বিনোদন ডেস্ক:
ছেলের নাম রেখেছেন ‘জয়’। কিন্তু পদবী দেননি। কারণ স্পষ্ট: ধর্ম নয়, মনুষ্যত্বই হোক তার পরিচয়। ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী দেবলীনা ভট্টাচার্য এবার মুখ খুললেন তাঁর সন্তানের ধর্ম পরিচয় নিয়ে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন দেবলীনা ও শেহনওয়াজ শেখ। ভিন্ন ধর্মের এই দম্পতিকে ঘিরে সে সময়ই শুরু হয় কটাক্ষ, অপপ্রচার ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা।
একজন হিন্দু নারী হয়ে মুসলিম পুরুষকে বিয়ে করায় সামাজিক মাধ্যমে নানান ধরনের সমালোচনার মুখে পড়েন দেবলীনা। স্বামীর গায়ের রং, ধর্মীয় পরিচয়—সবকিছু নিয়েই নেতিবাচক মন্তব্যের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু চুপ থাকার মানুষ নন ‘সাথ নিভানা সাথিয়া’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। বরাবরই সাহসিকতার সঙ্গে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন।
২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর মা হন দেবলীনা। ছেলে হওয়ার খবরে আনন্দিত ভক্তরাও জানতে চেয়েছিলেন, কী নাম রাখলেন নবজাতকের? দেবলীনা জানান, ছেলের নাম ‘জয়’। তবে নামের সঙ্গে কোনও ধর্মীয় উপাধি বা পদবী রাখেননি তিনি। এই বিষয়টিই আবার নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়। ছেলে হিন্দু না মুসলিম পরিচয়ে বড় হবে, তা নিয়েই প্রশ্নের পর প্রশ্ন।
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে দেবলীনা বলেন, “আমার সন্তানের কাছে সবচেয়ে বড় ধর্ম হবে মনুষ্য ধর্ম। আমরা ওকে ভারতীয় হিসেবে বড় করে তুলতে চাই। ও কোনও একটি ধর্ম নয়, বরং আমাদের দুজনের ধর্ম থেকেই কিছু না কিছু শিখবে।”
তাঁর মতে, “ধর্ম আসলে খুব সুন্দর একটা ধারণা। কিন্তু সমস্যা তখনই শুরু হয়, যখন কেউ ভাবে ধর্ম হয়তো একটাই।”
দেবলীনা আরও জানান, এখনো সন্তান জয়-এর মুখ প্রকাশ্যে আনেননি তাঁরা। অনেক বলিউড তারকার মতোই সন্তানের ব্যক্তিগত পরিসর রক্ষা করছেন এই দম্পতি।
উল্লেখ্য, শেহনওয়াজ শেখ পেশায় একজন জিম প্রশিক্ষক। বিয়ের আগে বহু বছর প্রেম করেছেন দেবলীনা ও শেহনওয়াজ। সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা ছিলেন দেবলীনা, এবং এখন সন্তান জন্মের পরও একইরকম দৃঢ় ও স্পষ্টবাদী অবস্থানে রয়েছেন তিনি। ২০২২ সালের শেষ দিকে জিম প্রশিক্ষক শেহনওয়াজ শেখকে বিয়ে করেন গোপি বহু অভিনেত্রী দেবলীনা ভট্টাচার্য। আর ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর মা হন তিনি। জন্ম দেন পুত্র সন্তানের।
সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, জয় যেন একজন উদার, সংবেদনশীল এবং মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে, সেটাই তাঁদের মূল লক্ষ্য।
📢 পাঠকদের জন্য আহ্বান:
আপনি কী মনে করেন—একটি শিশুর পরিচয়ে ধর্ম নয়, মনুষ্যত্বই বড় হওয়া উচিত? আপনার মতামত জানান আমাদের ফেসবুক পাতায় অথবা BusinessToday24.com–এ মন্তব্য করুন।