Home ক্যারিয়ার মেহজাবিনের লড়াই: ‘ভালো চাকরি’ না, আমি খুঁজেছি নিজের পথ

মেহজাবিনের লড়াই: ‘ভালো চাকরি’ না, আমি খুঁজেছি নিজের পথ

চাকরি খোঁজা, জীবন গড়া – পর্ব ২

আমিরুল মোমেনিন:

মেহজাবিন রশিদ। বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে, পড়াশোনা শেষ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ হওয়ার পর পরিবারের একটাই প্রশ্ন ছিল “তাহলে এখন তুই কী করবি?”

তাদের কল্পনায় ছিল, মেহজাবিন সরকারি চাকরির কোচিংয়ে ভর্তি হবে, অথবা কোনো টেলিভিশনে নিউজ প্রেজেন্টার হবে। কিন্তু মেহজাবিন চেয়েছিলেন কিছুটা ভিন্ন কিছু যেখানে নিজের লেখা, নিজের চিন্তা দিয়ে কাজ করতে পারবেন।

“আমি ছোটবেলা থেকেই লিখতাম, ডায়েরি, কবিতা, এমনকি ফেসবুকে মাঝেমধ্যে পোস্ট দিতাম,” মেহজাবিন বলছিলেন। “কিন্তু কেউ কখনও বলেনি, এই লেখালেখিও একটা পেশা হতে পারে।”

বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে এক বছর ঘরে বসে ছিলেন। আত্মীয়দের নানা কথা, বন্ধুদের ক্যাম্পাসে চাকরি পেয়ে যাওয়া, আর ঘরের চাপ সব মিলিয়ে একসময় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন।

ঠিক তখনই ফেসবুকে ‘ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটিং’ নামে একটি গ্রুপে চোখ পড়ে। সেখানে দেখা গেল, বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় যারা লিখতে পারেন, তারা অনলাইনে কাজ করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য। কেউ ব্লগ লেখে, কেউ প্রোডাক্ট বর্ণনা, কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য কন্টেন্ট।

মেহজাবিন সেই গ্রুপে যোগাযোগ করলেন, একজন সিনিয়র তাকে উৎসাহ দিলেন। প্রথম মাসে তিনি মাত্র ৩ হাজার টাকার কাজ পান। কিন্তু কাজের প্রশংসা মেলে, এবং ধীরে ধীরে তার কাজের অর্ডার বাড়তে থাকে।

মাত্র ছয় মাসের মধ্যে তিনি হয়ে ওঠেন একজন নির্ভরযোগ্য কন্টেন্ট রাইটার। এখন তিনি দেশের একাধিক ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, মাসে গড়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করেন, সেটাও ঘরে বসেই।

“আমি এখন আমার লেখার মাধ্যমে উপার্জন করি। নিজের সময়, নিজের জায়গা সবকিছু নিজের মতো। এটা হয়তো ‘ভালো চাকরি’ নয়, কিন্তু আমার কাছে এটা আমার জীবন,” বললেন মেহজাবিন।

তার কথা শুনে বোঝা যায়, সমাজের চোখে সফলতা মানে যা, তার বাইরেও আছে অনেক পথ—যদি সেই পথে হেঁটে যেতে সাহস থাকে।

👉 গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে।