বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চিনের যেখানে সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করেন সেই উত্তরাঞ্চলীয় নিংজিয়া ও গানসু অঞ্চলে শত শত মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। জিনজিয়াংয়ের পর এই চিনা দুই অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করেন।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, সংখ্যালঘুদের চিনাকরণ করার অংশ হিসেবে মসজিদগুলো বন্ধ করছে চিন সরকার।
স্যাটেলাইট ইমেজের ছবি পরীক্ষা করে এইচআরডব্লিউর গবেষকরা জানান, নিংজিয়ার দুটি গ্রামে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাতটি মসজিদের মিনার ও গম্বুজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া চারটি মসজিদ অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদের তিনটি প্রধান ভবন ধ্বংস করা হয়েছে এবং একটির অজু করার স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অব প্লাইমাউথের লেকচারার হান্নাহ থিয়েকার বলেন, অজু করার স্থান না থাকলে সাধারণত আপনি উপসনালয় ব্যবহার করতে পারবেন না। এর মানে হল উপাসনার স্থান কার্যতভাবে অপসারণ করা হচ্ছে। হান্না থিয়েকার ও ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের গবেষক ডেভিড স্ট্রপ জানান, নিংজিয়ায় প্রায় এক হাজার ৩০০ মসজিদ ছিল। ২০২০ সাল থেকে এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে এইচআরডব্লিউ ঠিক কত মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। তবে সরকারি প্রতিবেদন বলা হছে, এই সংখ্যা শত শত। নিংজিয়া প্রদেশের ঝোংওয়েই শহরের বাসিন্দা ১০ লাখের বেশি। ২০১৯ সালে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ২১৪টি মসজিদের স্থান পরিবর্তন করেছে, ৩৭টি নিষিদ্ধ করেছে ও ৫৮টি একত্রিত করা হয়েছে।
নিংজিয়ার এক ইমাম রেডিও ফ্রি এশিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে দুটি মসজিদ থাকলে সেগুলো এক করে ফেলা হয়েছে। মসজিদগুলো বন্ধ হওয়ায় অনেক তরুণ ও মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিরা ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে না। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্ম ধীরে ধীরে ইসলামের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে। আর এভাবে মুসলিমদের চিনাকরণ ঘটবে।
অস্ট্রেলিয়ান থিংকট্যাংক দ্য অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট জানায়, ২০১৭ সাল থেকে জিনজিয়াংয়ের ১৬ হাজার মসজিদের ৬৫ শতাংশ ধ্বংস করা হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।