হেলথ ডেস্ক:
অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণায় উঠে এসেছে একটি চমকপ্রদ তথ্য। ৩৫০ জন নববিবাহিত নারীর উপর পরিচালিত এই অনুসন্ধান বলছে বিয়ের প্রথম ছয় মাসে অধিকাংশ মহিলা গড়ে দুই কেজির বেশি ওজন বৃদ্ধি অনুভব করেন। শুধু তাই নয়, এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে সামাজিক চাপ, মানসিক ক্লান্তি এবং জীবনের নতুন অধ্যায়ের অবচেতন প্রভাব।
বিয়ের আগের চাপ আর পরের স্বস্তি
গবেষকরা দেখেছেন, বিয়ের আগে অধিকাংশ মেয়েই ‘ড্রিম ওয়েডিং ডে’ উপলক্ষে নিজেকে ‘ফিট’ ও আকর্ষণীয় দেখানোর চেষ্টায় লিপ্ত হন। পরিবার, বন্ধুবান্ধব এমনকি হবু বরও পরোক্ষভাবে শরীরচর্চা ও ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য অনুপ্রাণিত করেন। অনেকেই তখন কঠোর ডায়েটে যান, যা হয়তো স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব একটা উপযোগী নয়। এই সময়ে মানসিক চাপও থাকে তীব্র।
কিন্তু বিয়ের পর সে চাপ হঠাৎ কমে যায়। শুরু হয় নতুন সম্পর্কের উষ্ণতা, হানিমুন, দাওয়াত-আপ্যায়ন, পরিবারিক মেলামেশা এবং একপ্রকার মানসিক প্রশান্তির সময়কাল। স্বাভাবিকভাবেই তখন শরীরচর্চার অভ্যাসে ছেদ পড়ে, ডায়েটের শৃঙ্খলা ভেঙে যায়—ফলে ওজন বেড়ে যায় দ্রুত।
ওজন বাড়ে শুধু নারীদের নয়, পুরুষদেরও
এই গবেষণা জানায়, শুধু নারীরাই নন, অনেক পুরুষও বিয়ের পরে শারীরিক ফিটনেস নিয়ে আর আগের মতো সতর্ক থাকেন না। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষেরাও ওজন বৃদ্ধি ও অলসতার শিকার হন। এটি সম্পর্কের আরামদায়ক অবস্থার প্রতিফলন, তবে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
কীভাবে রক্ষা করবেন নিজের শরীরকে
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিয়ের আগের স্বাস্থ্যচর্চার মতো বিয়ের পরেও সচেতন জীবনযাপন বজায় রাখা উচিত। হানিমুনে গিয়ে ভারী ও চর্বিযুক্ত খাবারের বদলে বেছে নিতে পারেন গ্রিল করা মাছ বা মুরগি, তাজা শাকসবজি ও স্যালাড। মিষ্টি বা কেকের বদলে খেতে পারেন মৌসুমি ফল, বিশেষত পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল।
সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৪ দিন হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করা, ঘুমের সময় নির্ধারিত রাখা এবং মানসিক প্রশান্তির জন্য মেডিটেশন করাও উপকারি হতে পারে। এই অভ্যাস নতুন জীবনের শুরুতে না গড়ে তুললে পরবর্তীকালে তা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে।
ভালোবাসার জীবনে নিজের যত্নও জরুরি
জীবনের নতুন অধ্যায় মানেই নিজেকে ভুলে যাওয়া নয়। বরং এই সময়টিই হতে পারে নিজেকে নতুন করে জানার, নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার উত্তম সুযোগ। ভালোবাসা ও বন্ধনের এই সময়টিকে আরও সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে হলে, ওজন নয়—সচেতন জীবনচর্চাই হোক নতুন দম্পতির অঙ্গীকার।
এই প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন যেন আরও দম্পতি স্বাস্থ্যসচেতন হন বিয়ের পরেও। লাইক দিন, আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল বিয়ের পরের দিনগুলোতে?