‘আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড সাময়িক স্থগিত, কিন্তু দল নয়’
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
বুধবার লন্ডনের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে (চ্যাথাম হাউস) আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “১৭ বছর পর আমরা একটি সত্যিকারের নির্বাচন করতে যাচ্ছি, যা আমাদের ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন হবে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনের পর নতুন নির্বাচিত সরকারের কোনো দায়িত্বে আমার থাকার ইচ্ছে নেই। আমাদের কাজ কেবল শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ তৈরি করা।” প্রশ্নোত্তর পর্বে স্পষ্ট করে বলেন, “না, একেবারেই না। আমাদের কাউন্সিল অব অ্যাডভাইজারসের কেউই আগামী নির্বাচিত সরকারের অংশ হতে আগ্রহী নয়।”
ড. ইউনূস জানান, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা কমিশন কাজ করছে, এবং সরকার তাদের সুপারিশের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা জুলাই সনদের জন্য অপেক্ষা করছি। এটি জাতির সামনে তুলে ধরা হবে এবং তা হবে একটি ঐকমত্যের দলিল।”
আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “যখন কেউ তরুণদের হত্যা, নাগরিকদের গুম ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত থাকে, তখন তাকে রাজনৈতিক দল বলা যায় কিনা—এটা একটা বিতর্কের বিষয়।”
তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা ভেবেছিলাম, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর সেই অধ্যায় শেষ। কিন্তু যারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ অনুশোচনা প্রকাশ করেননি, বরং উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জাতির নিরাপত্তা ও রাজনীতিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। দল নয়, কেবল কর্মকাণ্ড। যতদিন না তদন্ত ও বিচার শেষ হয়, ততদিন এ স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।”
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সময় গণমাধ্যম এতটা স্বাধীনতা ভোগ করেনি, যতটা এখন করছে।”
এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বর্তমান সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা, অবাধ নির্বাচন আয়োজন এবং রাজনৈতিক সংস্কারে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।