আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কার বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়েছে বন্যপ্রাণী চোরাচালানের এক বিস্ময়কর কৌশল। সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী এক যাত্রীর প্যান্টের ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি জীবন্ত অজগর সাপের বাচ্চা। এই ঘটনা কেবল কাস্টমস কর্মকর্তাদেরই নয়, গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এমিরেটস এয়ারের একটি ফ্লাইটে ওঠার আগে যাত্রীর আচরণে সন্দেহ হলে কাস্টমস বিভাগ তাকে আটক করে। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত ঘাম ও অস্থিরতার কারণে তাকে স্ট্রিপ সার্চের নির্দেশ দেওয়া হয়। তখনই যাত্রীর প্যান্টের জিপ খুলতেই বেরিয়ে আসে একটি ছোট আকৃতির জীবন্ত অজগর সাপ।
বন্দরনায়েক কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া সাপটি দক্ষিণ এশিয়ার জঙ্গলে পাওয়া যায় এমন একটি বিরল প্রজাতির পাইথন। চোরাচালানকারী বিমানপথে এ সাপটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাচারের চেষ্টা করছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এটি বিদেশি পোষাপ্রেমীদের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যেই বহন করা হচ্ছিল।
চোরাচালানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল একটি বিশেষভাবে কাস্টমাইজ করা অন্তর্বাস, যাতে প্রাণীটির বেঁচে থাকার জন্য বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ছিল। ওই ব্যক্তি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে এবং তদন্তকারীরা মনে করছেন, সে কোনো বড় আন্তর্জাতিক চক্রের অংশ হতে পারে।
প্রাণীটি বর্তমানে ডিহিওয়ালা জাতীয় চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণের পর তাকে সংরক্ষণ কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ।
অতি সম্প্রতি ভারতেও ঘটে গেছে একই ধরনের এক ঘটনা। মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে প্রাণী চোরাচালানের আরেক অভিনব কৌশল। গত সপ্তাহে দুবাই থেকে আগত এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি করে কাস্টমস কর্মকর্তারা উদ্ধার করেন এক ডজনের বেশি বিষধর ও অদ্ভুত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাপ এবং কিছু বিরল প্রজাতির কচ্ছপ। এদের কয়েকটি ব্যাগে করে আনা হলেও কিছু প্রাণী রাখা হয়েছিল প্লাস্টিকের কৌটায়, যা যাত্রী তার পরিধেয় কাপড়ের ভেতর লুকিয়ে রেখেছিল।
মুম্বই কাস্টমসের মতে, এসব প্রাণী পাচার করে আন্তর্জাতিক পাচারচক্র বিশাল অঙ্কের অর্থ আয় করে, এবং এক্ষেত্রে ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা করা হয়েছে।
এই দুই ঘটনায় এক সুস্পষ্ট সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে নতুন নতুন পদ্ধতিতে প্রাণী পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট। শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কাস্টমস বিভাগগুলো এখন আরও সতর্ক এবং বিমানবন্দরের স্ক্যানিং ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।