জমিয়তুল ফালাহ মাঠে যৌতুক ও মাদকবিরোধী মহাসমাবেশ
আল্লামা আবুল কাশেম নূরীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়ার আহ্বান
চট্টগ্রাম: রজভীয়া নূরীয়া কমিটি বাংলাদেশ- এর উদ্যোগে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে দ্বীন পীরে তরিক্বত আল্লামা আবুল কাশেম নূরী (মু.জি.আ) এর আহ্বানে চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে ১৩তম যৌতুক ও মাদকবিরোধী মহাসমাবেশ, গুণীজন সংবর্ধনা এবং বর্ণাঢ্য র্যালী শনিবার দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কাউছার হামিদ- এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১ম অধিবেশন যৌতুক ও মাদকবিরোধী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি। তিনি বলেন, যৌতুক দেয়া-নেয়া এবং মাদককে সবাই ঘৃণা করে। তবুও যৌতুক ও মাদকের আভিশাপ থেকে নিষ্কৃতি মিলছেনা। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। যারা বিত্তবান ও সচ্ছল তারা বিয়ে শাদিতে অঢেল টাকা খরচ করে কন্যাকে পাত্রস্থ করেন। মূলত এ কারণেই যৌতুকপ্রথা সমাজে জিইয়ে রয়েছে। বিয়ের নামে অঢেল অপচয় ও বিলাসিতা না থামালে যৌতুকের গ্লানি থেকে সহসা মুক্তি মিলবে না।
উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, যৌতুক ও মাদকবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ইনসাফভিত্তিক মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সরকারের বড় লক্ষ্য। সরকারের নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি আলেম সমাজসহ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যৌতুক প্রথা ও মাদককে দেশ ও সমাজ থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।
মহাসমাবেশে সহস্রাধিক তরুণ যুবক যৌতুক ও মাদককে সমস্বরে ‘না’ বলেন। চট্টগ্রাম থেকে ব্যতিক্রমী যৌতুক ও মাদকবিরোধী সমাজিক আন্দোলনের সূচনার জন্য আল্লামা নূরীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
মহাসমাবেশে উদ্বোধক ছিলেন মাইজভান্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিক্বত শাহ্সূফি মাওলানা সৈয়্যদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী।
তিনি বলেন, যৌতুক ও মাদক সামাজিক ব্যাধি। নিজের অজান্তেই তা আমরা লালন ও পরিচর্যা করছি। আমরা সচেতন নই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে অচিরেই যৌতুক, মাদকসহ সামাজিক অবক্ষয় প্রবণতার রাশ টানা সম্ভব হতে পারে।
মহাসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক মুহাম্মদ জাহিদুল হাসান রুবায়েত এবং সদস্য সচিব মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরীর যৌথ সঞ্চালনায় মূখ্য আলোচক ছিলেন আন্জুমানে রজভীয়া নূরীয়া ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট ও আহলে সুন্নাত ওয়াল আমা’আত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব পীরে তরিক্বত হযরতুলহাজ আল্লামা মুহাম্মদ আবুল কাশেম নূরী (মু.জি.আ)। তিনি বলেন, দেশ ও সমাজে যৌতুক ও মাদকের মতো জঘন্য ব্যাধি ভয়ংকর রূপ নেবে, আর আমরা আলেম সমাজ তা চেয়ে চেয়ে দেখবো তা কখনো হতে পারে না। যৌতুক-মাদকসহ সকল প্রকার সামাজিক ব্যাধি থেকে নিষ্কৃতির জন্য আলেম, ইমাম ও পীর মাশায়েখকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। না হয় আল্লাহর আদালতে আমরা কী জবাব দেবো?
তিনি যৌতুক, মাদক, নারী ও শিশু নিপীড়ন থামাতে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনকে আরো ঢেলে সাজানোর তাগিদ দেন।
মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল, আল্লামা মাসউদ হোসাইন আলকাদেরী, পীরে তরিক্বত মহিউদ্দিন লতিফী, এম এ মতিন, হাশেমীয়া আলীয়া দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন আলহাজ কাযী মুহাম্মদ আবুল ফোরকান হাশেমী, যুবনেতা সাদেকুর রহমান খান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মোহাম্মদ মিঞা জুনাইদ। মহাসমাবেশ শেষে পীরে তরিক্বত আল্লামা আবুল কাশেম নূরী (মু.জি.আ) এর নেতৃত্বে যৌতুক ও মাদকবিরোধী বর্ণাঢ্য র্যালী নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি