বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঈদুল আজহাকে ঘিরে প্রবাসীদের অর্থ পাঠানো বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স আয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা।
গত বছরের একই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২২৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে, ঈদুল ফিতরকে ঘিরে দেশে এসেছিল রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স যা এখনো দেশের সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স আয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ঈদুল আজহা সামনে রেখে কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার এবং অন্যান্য পারিবারিক ব্যয়ের জন্য প্রবাসীরা বেশি অর্থ পাঠান। এ সময় গ্রামীণ অর্থনীতিতে নগদ টাকার প্রবাহ বাড়ায় সামগ্রিক বাজার ব্যবস্থা চাঙা হয়। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই প্রবাহ শুধু প্রবাসী পরিবারের ভরণপোষণ নয়, দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিতেও বড় অবদান রাখছে।
তবে ঈদের প্রভাব ছাড়াও সরকারের প্রতি আস্থা এবং বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাংকিং খাত নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। হুন্ডির পরিবর্তে অনেকেই এখন ডিজিটাল ও বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাচ্ছেন, কারণ এতে নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা এবং সরকারের ঘোষিত প্রণোদনাও মিলছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী। জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়কালে দেশে এসেছে মোট ২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময়ে প্রবাসী আয় ছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের স্থিতিশীল প্রশাসন, ডিজিটাল চ্যানেলের সহজলভ্যতা এবং ঈদকেন্দ্রিক চাহিদা—এই তিন উপাদানের সমন্বয়ে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ নতুন গতি পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও আশা করছেন তারা।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবারের মধ্যে ৩৫.২% চট্টগ্রাম বিভাগে এবং ১০.১% সিলেট বিভাগে অবস্থান করে ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) চট্টগ্রাম জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ১৮১ কোটি ডলার, যা ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ । একই সময়ে সিলেট জেলায় এসেছে ৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার ।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
👍 যদি প্রতিবেদনটি ভালো লেগে থাকে, তাহলে দয়া করে লাইক দিন এবং শেয়ার করুন। আপনার এই ছোট্ট সহযোগিতা আমাদের অনেক বড় উৎসাহ দিবে!
🔄 আপনার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করুন, যাতে আরও বেশি মানুষ প্রবাসী আয়ের তথ্য জানতে পারে।
❤️ আপনার সাপোর্ট আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। লাইক ও শেয়ার করেই আমাদের পাশে থাকুন।