বিনোদন ডেস্ক:
ঈদের আনন্দঘন সময়ে মুক্তি পাওয়া পাকিস্তানি চলচ্চিত্র ‘লো গুরু’, পরিচালক নাদিম বেগ-এর বাণিজ্যিক ঘরানার একটি প্রচেষ্টা, যা দর্শকদের ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা দিতে পারলেও গল্পের গভীরতা ও মৌলিকতায় ঘাটতি রয়েছে। সিনেমার কাহিনি লিখেছেন বাসি চৌধুরী, যিনি মূলত হালকা-ফুলকা হাস্যরসাত্মক গল্পে পারদর্শী। কিন্তু এই সিনেমায় বিভিন্ন ভারতীয় ও আগের পাকিস্তানি ছবির দৃশ্য ও কাঠামোর প্রতিফলন স্পষ্ট— ‘তিফা ইন ট্রাবল’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ও ‘দিল চাহতা হ্যায়’-এর মতো ছবির ছায়া দেখা যায়।
নাদিম বেগের পরিচালনায় সিনেমার লোকেশন ও ক্যামেরার কাজ (সিনেমাটোগ্রাফি) সত্যিই চমৎকার, যা করেছেন সুলেমান রেজাক। কিন্তু হাস্যরসের ক্ষেত্রে পুরনো পদ্ধতি বিশেষ করে পশতু উচ্চারণ নিয়ে বারবার ঠাট্টা এখন আর ততটা কার্যকর নয়, বরং কষ্টকর লাগে।
অভিনয়ে হুমায়ুন সাঈদ তাঁর অভিজ্ঞতা দিয়ে বেশ কিছু দৃশ্যে ভালো করেছেন, আর মাহিরা খান তার রূপ-সৌন্দর্যে নজর কাড়লেও অভিনয়ে নতুন কিছু আনতে পারেননি। অন্যদের মধ্যে রামশা খান, আহমাদ আলী বাট ও মেরিনা খানের অভিনয় ছিল নিস্তেজ। নতুন মুখ মানি লিয়াকত কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছেন।
সংগীত নিয়ে উচ্চ প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে চারজন সুরকার মিলে ভিন্নধর্মী কিছু উপহার দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ‘দিল তোড়ন ওয়ালিয়া’ শিরোনামের গানটি সুন্দর হলেও প্রচারে অনুপস্থিত ছিল। ‘বে-খবরিয়া’ গানে ভুল উচ্চারণ ও দুর্বল কবিতার ব্যবহার অত্যন্ত হতাশাজনক।
‘লো গুরু’ চমৎকার প্রেজেন্টেশন এবং ঈদের আমেজে দর্শকদের আকর্ষণ করতে পেরেছে, কিন্তু এর মৌলিকতা ও গল্প বলার দিক থেকে দুর্বলতা স্পষ্ট। দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে ফেরানো গুরুত্বপূর্ণ, তবে পাকিস্তানি সিনেমার টিকে থাকার জন্য ভালো গল্প, সঠিক ভাষা ও নতুনত্ব প্রয়োজন।