Home বিনোদন রূপবতী ও রাজা চন্দ্রদ্বীপের অলৌকিক প্রেম

রূপবতী ও রাজা চন্দ্রদ্বীপের অলৌকিক প্রেম

অনেক দূরের এক রাজ্যে বাস করতেন এক দয়ালু রাজা। তাঁর নাম ছিল রাজা চন্দ্রদ্বীপ। প্রজারা তাকে ভালোবাসতেন, কারণ তিনি তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনতেন, সাহায্য করতেন এবং সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকতেন। তবে একসময় তিনি বুঝতে পারলেন, দরবারে বসে শুধু আদেশ দিলেই প্রজাদের প্রকৃত দুঃখ বোঝা যায় না।

তখন তিনি এক অলৌকিক মন্ত্র জোগাড় করেন, যাতে করে ইচ্ছা করলে শুকপাখি বা সরোসপাখির রূপ নিতে পারেন। রাতের অন্ধকারে তিনি উড়ে বেড়াতেন গ্রামের পর গ্রামে, কখনো শুক, কখনো সরোস হয়ে—প্রজাদের মুখে মুখে শুনতেন তাদের বাস্তব জীবন, অভিযোগ, আশা, বেদনার কথা।

একদিন এক গ্রামে উড়ে গিয়ে তিনি দেখতে পান, নদীর ধারে বসে এক কৃষককন্যা গান গাইছে। তার নাম রূপবতী। কণ্ঠে ছিল বিষণ্নতা, চোখে যেন আকাশের অপেক্ষা। রাজা, তখন সরোসের রূপে, প্রতিদিন আসতেন তার গান শুনতে। একদিন রূপবতী বুঝে ফেলল—এই পাখি সাধারণ পাখি নয়। পাখির চোখে ছিল মানুষের আবেগ।

তাদের মধ্যে এক অলিখিত বন্ধন গড়ে ওঠে। রাজা তখন মানব রূপে এসে রূপবতীর সঙ্গে দেখা করেন এবং ভালোবাসার কথা জানান। কিন্তু রূপবতী বলেন, “আমি ভালোবাসতে পারি সেই মানুষকে, যে তার পরিচয় গোপন করে না।”

তখন রাজা সত্যি সব কথা খুলে বলেন। রূপবতী হতবাক হলেও রাজাকে ক্ষমা করে দেন, কারণ তিনি ভালোবাসতেন রাজাকে তার মানবতা আর মমতার জন্য। রাজা তখন প্রজাদের সামনে স্বীকার করেন, তিনি তাদের কথা সরাসরি জানতে পাখির রূপে ঘুরতেন।

রূপবতীকে তিনি রানী হিসেবে গ্রহণ করেন। তারা দুজনে মিলে রাজ্যে এক নতুন যুগের সূচনা করেন—যেখানে শাসন হতো ভালোবাসা, শ্রবণ ও সহানুভূতির ভিত্তিতে।