তাসনিয়া মাহবুব তৈশী
চা এর দেশ হিসেবে খ্যাত শ্রীমঙ্গল
চা এবং বাংলাদেশ
চা বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান অর্থকারী ফসল এবং আমাদের দেশে এই চা উৎপাদনের রয়েছে বিশাল ইতিহাস । চা চাষের জন্য আবাদি এলাকায় ৪০ শতাংশ ছায়ার প্রয়োজন এবং এই মাত্রার কম বেশি চা চাষের জন্য অনুপযোগী। এই কারণে পাহাড় ও প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেট অঞ্চল বেশি উপযোগী। ১৮৫৪ সালে সিলেট শহরের এয়ারপোর্ট রোডের কাছে মালনীছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত মালনীছড়া চা বাগানই প্রথম বাণিজ্যিক চা বাগান।
বাংলাদেশে মোট ৭টি ভ্যালী রয়েছে এর মধ্যে সিলেট বিভাগে রয়েছে ৬টি। এই ভ্যালীতে মোট চা বাগানের সংখ্যা ১৩৮টি। শুধু শ্রীমঙ্গলে রয়েছে ৩৮টি চা বাগান। এ জন্য শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানীও বলা হয়।
চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গল
শ্রীমঙ্গল শহরটা ছোট্ট, তবে বেশ গোছানো। এই শহরের সব স্থাপনার মাঝেই নান্দনিকতার ছাপ। শহরের বেশির ভাগটা জুড়েই রয়েছে চা-বাগান। এখানে আপনি যে দিকে-ই তাকাবেন দু’চোখ জুড়ে দেখবেন চায়ের বাগান। যা দেখলে চোখ জুড়ে খেলে যাবে এক অপরূপ সুন্দর ও সবুজের সমারোহ। কারণ শ্রীমঙ্গলের পূর্বদিকে কিছূ অংশ হাওর ছাড়া পুরো উপজেলা জুড়ে শুধু চা বাগান।
প্রকৃতি ও আকর্ষণ
আপনি যখন মাইলের পর মাইল চা বাগানের ভিতর দিয়ে চলবেন তখন আপনার মনে হবে বিশ্বের সকল সৌন্দর্য্য যেন আপনার সামনে। একটি রিকশা, মিশুক কিংবা প্রাইভেট কার নিয়ে প্রবেশ করুন চা বাগানের ভিতর। চা বাগানের ঢুকার পর মনে হবে ভিন্ন পরিবেশ। মনে হবে কোন শিল্পী যেন মনের মাধুরী মিশিয়ে স্তরে স্তরে সবুজকে সাজিয়ে রেখেছে। চারপাশে কেবল সবুজের মেলা। এখন আমরা জানবো শ্রীমঙ্গল এবং এর আশেপাশের কিছু স্থান যা আপনাকে মায়াজালের মতো আঁকড়ে ধরবে ।
কিভাবে যাবেন চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গল
প্রতিদিন ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের পথে চারটি আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রা করে কমলাপুর রেলষ্টেশন থেকে। এছাড়া সায়েদাবাদ থেকেও আসতে পারবেন চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলে ।
কোথায় থাকবেন
কোলাহল মুক্ত পরিবেশে থাকতে চাইলে উঠতে পারেন চা বাগানের ভিতর বিটিআরআই রেস্ট হাউজ অথবা টি রিসোর্ট-এ। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল শহরে ২০টিরও বেশি আবাসিক হোটেল রয়েছে। ভাল দেখে যে কোন একটিতে উঠতে পারেন। ভাড়া মোটামুটি কম। শ্রীমঙ্গল শহরে উখযোগ্য হোটেলগুলো হলো_ টি টাউন রেস্ট হাউজ, নিরালা রেস্ট হাউজ, এলাহী পস্নাজা, হোটেল বিরতি, আল-রহমান, হোটেল মুক্তা প্রভৃতিতে উঠতে পারেন। এছাড়াও সরকারি ও আধা সরকারী সংস্থাগুলোর বেশ কিছু বাংলো রয়েছে এখানে। তবে কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে এখানে ওঠতে পারেন।