বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: হালিশহরে এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনায় সাইকেল আরোহী এক তরুণ প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার (১১ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হালিশহর বড়পোল মোড় সংলগ্ন বন ফায়ার রেস্টুরেন্টের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তরুণের নাম ওসমান গনি শাকিব (১৯)। তিনি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পূর্ব বাইশারী গ্রামের মোহাম্মদ নাছিরের ছেলে। পরিবারসহ তিনি হালিশহর কে ব্লকের ৬ নম্বর রোডের একটি ভবনে বসবাস করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে, সন্ধ্যার কোল ঘনিয়ে আসার ঠিক আগমুহূর্তে শাকিব তার সাইকেলে কোথাও যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই সাদা রঙের একটি হোন্ডা সিভিক (চট্ট মেট্রো-গ ১৪-২৮৫৬) প্রাইভেটকার প্রবল গতিতে এসে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় তাকে। ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গেলে গাড়ির চাকা সরাসরি তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান এই তরুণ।
তৎক্ষণাৎ চারদিক থেকে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। মুহূর্তের মধ্যে রাস্তার পাশে জমে যায় শত শত মানুষ। বিক্ষুব্ধ জনতা গাড়িটি আটক করে এবং চালককে ধরে ফেলে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হালিশহর থানা পুলিশ। পুলিশ গাড়িচালক তানিম হোসেন রাব্বিকে (১৯) আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, “ঘটনার পরপরই চালককে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নিহত তরুণের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”

তানিম হোসেন রাব্বি হালিশহর এল ব্লকের ১ নম্বর রোডের বাসিন্দা। তার বয়স ১৯ বছর হলেও গাড়ি চালানোর বৈধ লাইসেন্স ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে। তিনি হালিশহর এল ব্লক ১ নম্বর রোডের এরশাদ হোসেনের ছেলে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, তার বেপরোয়া ও অবিবেচনাপ্রসূত চালনা এই দুর্ঘটনার কারণ। একটি প্রাণ এমনভাবে নিভে যাওয়া শুধু একটি পরিবারের শোক নয়, গোটা সমাজের জন্যও এক গভীর ট্র্যাজেডি।
এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—রাস্তায় বেপরোয়া গতি কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। একটি মুহূর্ত, একটি গাড়ির চাকা—একটি স্বপ্নময় জীবনের সমস্ত সম্ভাবনাকে চিরতরে থামিয়ে দেয়।
✅ সতর্কতা ও আইনপ্রয়োগে আরও কঠোরতা দরকার
এই দুর্ঘটনা শুধু শোকের বার্তা নয়, এটি আমাদের সকলের জন্য সতর্ক সংকেত। যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, যাদের বয়স বা মানসিক পরিপক্বতা গাড়ি চালানোর উপযুক্ত নয়, তাদের হাতে স্টিয়ারিং তুলে দেওয়ার আগে পরিবার ও সমাজের আরও সচেতন হওয়া জরুরি। সেইসঙ্গে ট্রাফিক আইন প্রয়োগে পুলিশ প্রশাসনের কঠোরতা আজ সময়ের দাবি।