Home কৃষি ৫০ মণের ‘যুবরাজ’, দিনে দু’হাজার টাকার খাবার

৫০ মণের ‘যুবরাজ’, দিনে দু’হাজার টাকার খাবার

‘যুবরাজ’

এম রবিউল ইসলাম রবি

 ঝিনাইদহ: যুবরাজকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শাহ আলম মিয়া। এই যুবরাজ তার লালন-পালন করা ষাঁড়ের নাম। যুবরাজের ওজন প্রায় ৫০ মণ। প্রতিদিন এটার খাবার খরচ ২ হাজার টাকা।

শাহ আলম মিয়ার বাড়ি সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে। আব্দুল্লাহ এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম-এর মালিক তিনি। ৪ বছর যাবৎ ষাঁড়টিকে লালন-পালন করছেন। গত বছর কোরবানির ঈদে দাম ২১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকা হয়েছিল। এবারে দাম চেয়েছেন ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু করোনার কারণে ক্রেতা না থাকায় গরু বিক্রি করা নিয়ে চিন্তিত তিনি। এক দিকে গো-খাদ্যের চড়া দাম। অন্যদিকে করোনার কারণে পশু হাট বন্ধ ও ক্রেতা সংকট হওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে হাট চালু করা ও খামারিদের সরকারি প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবি তার।

শাহআলম মিয়া জানান, যুবরাজ নামে ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি স্থানীয় বাজার থেকে ৬ মাস বয়সে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় কিনে আনা হয়। এখন তার বয়স ৪ বছর ৬ মাস।

জানান, ‘শুধু মাত্র এই ষাঁড়ের পেছনে প্রতিদিন খাবারের জন্য খরচ হয় প্রায় ২ হাজার টাকা। আমি প্রায় ৭ বছর যাবৎ খামার পরিচালনা করছি। যুবরাজের ওজন এখন ৫০ মণের উপরে। আমার গরুটির দাম চেয়েছি ৩০ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে আমার গরুটির দাম ১৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। গত বছর ঈদে এটির দাম ২১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা হয়েছিল। এবার করোনা ভাইরাসের মধ্যে কী হয় জানি না, ভাগ্যে কী আছে! গরুটির পেছনে ১৭/১৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে।’

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী, জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগ পশুর হাট বন্ধ রেখেছে। তবে আগামী ২৩ অথবা ২৫ জুলাই থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত একটানা গরুর হাট খোলা রাখা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, জেলায় যুবরাজ নামের একটি ষাঁড় প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে শ্রেষ্ঠ গরু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ওই গরুটির ওজন আনুমানিক ৫০ মণ বলে ধারণা যাচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ১২ হাজার ৬ শত ৫৬ টি খামার রয়েছে। তাতে প্রায় ৬১ হাজার ছোট বড়  গরু রয়েছে।

মোহাম্মাদ শাহআলম মিয়ার বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায়। ছাত্র জীবনে তিনি শিবচরেই কাটিয়েছেন। প্রায় ৮ বছর পূর্বে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামে চলে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরপর অর্থ উপার্জনের জন্য তিনি সিঙ্গাপুরসহ ৪১টি দেশে গিয়েছেন। পরে ঝিনাইদহে ফিরে এসে বাড়ি ও বাড়ির সাথে একটি খামার করেন। খামারের নাম দিয়েছেন আব্দুল্লাহ এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম। ৭ বছর এই খামারেই তিনি গরু লালন-পালন করেন। বর্তমানে তিনি এই খামারেই সময় দেন।