পাকিস্তানে হাজারো কণ্ঠে ভারতবিরোধী স্লোগান
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরজুড়ে শত শত মানুষ বিক্ষোভে নামেন। আজাদ কাশ্মীরসহ লাহোর, মুজাফ্ফরাবাদ এবং কোয়েটার মতো এলাকায় আয়োজিত এই বিক্ষোভে ভারতবিরোধী নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রাস্তাঘাট।
পাহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু ঘটে, যা গত দুই দশকে অঞ্চলটিতে অন্যতম ভয়াবহ হামলা। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে “উত্তর ও প্রতিশোধ” নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি এটিকে “সীমান্ত-পার সন্ত্রাসবাদ” বলে অভিহিত করেন।
এই ঘোষণার জেরে লাহোরের ওয়াহগা সীমান্তে একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভে প্রায় ৭০০ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সেখানে এক বিক্ষোভকারী আজমল বালোচ বলেন, “যদি ভারত যুদ্ধ চায়, তবে সামনে আসুক খোলাখুলি। আমরা প্রস্তুত।”
আরেক বিক্ষোভকারী, ২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ ওওয়াইস বলেন, “জল আমাদের অধিকার, তা আমরা যেকোনো মূল্যে ফিরিয়ে নেবো, প্রয়োজন হলে যুদ্ধ করেও।”
আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফ্ফরাবাদেও প্রায় ৩০০ জন মানুষ প্রতিবাদে অংশ নেন। পাকিস্তান পিপলস পার্টির এক নেতা শওকত জাভেদ মির বলেন, “যদি ভারত হামলার চেষ্টা করে, আমরা কাশ্মীরিরাই প্রথম সারিতে যুদ্ধ করব। পাকিস্তানের জন্য জীবন দিতেও রাজি।”
এদিকে কোয়েটায় প্রায় ১৫০ জন বিক্ষোভকারী ভারতবিরোধী স্লোগান দিয়ে কাশ্মীরের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেন।
বিক্ষোভের পাশাপাশি ইসলামাবাদে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (NSC) উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের জলচুক্তি (Indus Waters Treaty) স্থগিতের ঘোষণাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। তারা ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্তও অনুমোদন করে। ইসলামাবাদের দাবি, ভারতের একের পর এক আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের জবাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতের হুমকির প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক নয়, জনপর্যায়ে তা রূপ নিচ্ছে এক আবেগঘন বিক্ষোভে। সামনে উত্তপ্ত সময় অপেক্ষা করছে উপমহাদেশের দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে।
