বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কুমিল্লা: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আমরা নিষিদ্ধ করতে পেরেছি, কিন্তু তাদের অর্থব্যবস্থা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। কুমিল্লাসহ দেশের অনেক উপজেলার রাজনীতি, চাই সেটা আওয়ামী লীগ হোক বা বিএনপি সবই এখন আওয়ামী লীগের টাকায় চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লায় জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত, শহীদ ও বীর সন্তানদের সম্মানে আয়োজিত জুলাই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন হাসনাত।
তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা আমাদেরকে শত্রু ভাববেন না। এটা আপনাদের ভালোর জন্যই বলছি। কুমিল্লার বহু উপজেলায় সব দলের রাজনীতি আওয়ামী লীগের অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।”
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল-কে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তারা কোর্টে গেলে জামিন পেয়ে যাচ্ছে। এই জামিনের পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে তা আপনি জাতির সামনে আনুন। আপনি বারবার বলছেন আপনাকে ভিলেন বানানো হচ্ছে, তাহলে বলুন কে বাধা দিচ্ছে, কে কাজ করতে দিচ্ছে না?”
হাসনাত আরও বলেন, “যারা খুন করেছে, তারা জামিনে বের হয়ে শহীদ পরিবারের বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে এটা যেমন আমাদের ব্যর্থতা, তেমনি আসিফ নজরুল স্যারেরও ব্যর্থতা। জানুয়ারি মাসেই দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা ছিল। এখন মে মাস, এখনও ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়নি কেন? খুনিদের বিচারই তো এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম সংস্কার হওয়া উচিত।”
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই চাই। সংস্কারের মধ্য দিয়েই নির্বাচন হবে। বিচার হবে, সংস্কারও হবে।”
মানবিক করিডর নিয়ে সরকারকে অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কোনো ধোঁয়াশার মধ্যে থাকতে চাই না। বাংলাদেশকে আমরা কোনো পরাশক্তির আধিপত্যে দিতে চাই না না ভারতের, না পাকিস্তানের, না আমেরিকার।”
১৪ দলের অবস্থান নিয়েও তিনি সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চান। বলেন, “বর্তমান সরকার ১৪ দল নিয়ে কী ভাবছে, সেটি পরিষ্কার করতে হবে। আমরা সহযোগিতা করতে চাই, কিন্তু অনেক বিষয়ে এখনও বিচার পাইনি। আহতদের পুনর্বাসন হয়নি, কর্মসংস্থান হয়নি, বিচারেও অগ্রগতি নেই।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা যতক্ষণ রাস্তায় নামিনি, ততক্ষণ সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
এ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, খেলাফতে মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। আয়োজক ছিল কুমিল্লা জেলা ও মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
