Home আন্তর্জাতিক মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ও জাহাজ সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ও জাহাজ সরিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত তাদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ও নৌযান সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের ফলে কুয়েত, বাহরাইন ও কাতারসহ উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি ঘাঁটি থেকে এসব সামরিক সরঞ্জাম ও বাহিনী পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

পেন্টাগনের একাধিক সূত্র জানায়, এই পদক্ষেপ মূলত চীন ও রাশিয়ার প্রতি অধিক মনোযোগ দেওয়ার কৌশলের অংশ। এশিয়া-প্যাসিফিক ও ইউরোপীয় থিয়েটারে সামরিক সক্ষমতা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্র এখন শক্তি পুনর্বিন্যাস করছে। পাশাপাশি, মধ্যপ্রাচ্যে টানা দুই দশকের সামরিক উপস্থিতি ও রক্ষণাবেক্ষণের ভার অনেকটাই হ্রাস করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সামরিক প্রত্যাহার একটি কৌশলগত বার্তা বহন করছে—বিশেষ করে ইসরায়েল-গাজা সংকট, সৌদি-ইরান সম্পর্কের উত্তরণ এবং ইয়েমেন যুদ্ধের পটভূমিতে। তবে এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক মাইকেল ওহানলন বলেন, “এই প্রত্যাহার দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ নীতির অবসানকে প্রতিফলিত করে। তবে এর ফলে মিত্র রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ বাড়তে পারে।”

এই সিদ্ধান্তের আওতায় অন্তত দুটি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান স্কোয়াড্রন ও একটি অ্যাডভান্সড রাডার সিস্টেম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া একটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ বাহিনীও পারস্য উপসাগর ত্যাগ করেছে।

এদিকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এই পরিবর্তনে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। উপসাগরীয় দেশগুলোর মত, এই প্রত্যাহার ইরানের আগ্রাসী ভূমিকাকে উৎসাহিত করতে পারে এবং আঞ্চলিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।

তবে পেন্টাগন জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মানে এই নয় যে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে যাচ্ছে। বরং, তারা ‘সক্ষমতা পুনর্বিন্যাসের’ মাধ্যমে নতুন করে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করছে এবং প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিরক্ষা কৌশলে রূপান্তর ঘটাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত পরিবর্তন শুধু সামরিক নয়, বরং ভূরাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন ভারসাম্য সৃষ্টির ইঙ্গিতও বহন করছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।