এভিয়েশন ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক এভিয়েশন খাত গভীর সঙ্কটে পড়েছে। ইরান, ইরাক, জর্ডান ও ইসরায়েলের আকাশসীমা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ঘোষণা হওয়ায় হাজার হাজার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ এয়ারলাইন্সগুলো যেমন এমিরেটস, ক্যাতার, ইত্তিহাদ, টার্কিশ এয়ারলাইনস, ডেল্টা ও ইউনাইটেড একাধিক ফ্লাইট বাতিল বা বিকল্প পথে পরিচালনা করতে বাধ্য হয়েছে। অনেক যাত্রীকে মাঝপথে অন্য দেশে অবতরণ করতে হয়েছে। ফ্লাইট বিলম্ব ও বাতিলের কারণে ভোগান্তি বাড়ছে।
জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিমানগুলো দীর্ঘ রুটে উড়তে বাধ্য হচ্ছেন, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া থেকে ইউরোপগামী ফ্লাইটগুলোতে। উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইটগুলো এখন সরাসরি না গিয়ে আফ্রিকা ও এশিয়া হয়ে ঘুরে যায়, যার ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে অতিরিক্ত সময় লাগছে।
বিমার খরচ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়াকড়ি করেছে। যুদ্ধ ঝুঁকির কারণে বিমার বিমা হার বৃদ্ধি পেয়ে এয়ারলাইন্সগুলোকে আর্থিক চাপ নিতে হচ্ছে। বিমান কর্মীদের মধ্যে নিরাপত্তা উদ্বেগ রয়েছে, অনেক পাইলট দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক।
ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো ফ্লাইটগুলো মাঝপথে পরিবর্তিত গন্তব্যে অবতরণ করেছে। দিল্লি ও মুম্বাই বিমানবন্দরে প্রতিদিন বড় ধরনের বিলম্ব ও যাত্রী অসন্তোষের ঘটনা ঘটছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে এয়ারলাইন্স শেয়ারের দাম কমেছে। আমেরিকার ইউনাইটেড ও ডেল্টা এয়ারলাইন্সের শেয়ারে ৩ থেকে ৫ শতাংশ পতন দেখা গেছে।
আন্তর্জাতিক এভিয়েশন সংস্থা আইএটিএ বলছে, দ্রুত আকাশপথ খুলে না দেওয়া হলে এ পরিস্থিতি বিমান খাতে বড় ধরনের আর্থিক ও অপারেশনাল ক্ষতি আনতে পারে।
যাত্রীদের ভোগান্তি:
মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের কারণে বাতিল ও বিলম্বিত ফ্লাইটে যাত্রীরা বিভিন্ন রকম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইট মাঝপথে দুবাইয়ে অবতরণ করতে বাধ্য হয়। অনেক যাত্রী চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন।
বাংলাদেশের সারাহ হক দোহা বিমানবন্দরে আটকে গেছেন ১৮ ঘণ্টা ধরে। নিরাপত্তা সংকটের কারণে বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। খাবারের ব্যবস্থা সীমিত এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়ে আশংকা বিরাজ করছে।
মুম্বাই বিমানবন্দরে যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। ব্যবসায়িক মিটিং বা চিকিৎসার জন্য যাত্রীরা দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সারসংক্ষেপ:
বিষয় | অবস্থা |
---|---|
আকাশপথ | মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক বন্ধ |
ফ্লাইট অবস্থা | বাতিল ও বিকল্প রুট |
আর্থিক প্রভাব | জ্বালানি ও বিমা খরচ বৃদ্ধি |
যাত্রী ভোগান্তি | বিলম্ব, বাতিল ও অনিশ্চয়তা |
শেয়ারবাজার | এয়ারলাইন্স শেয়ারে ৩-৫% পতন |