Home পর্যটন সিলেটে পর্যটনকেন্দ্রে বাধা, আলোচনায় কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

সিলেটে পর্যটনকেন্দ্রে বাধা, আলোচনায় কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্র

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের বিরুদ্ধে। রবিবার (৮ জুন) বিকেলে উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের চরারবাজার এলাকায় অবস্থিত জনপ্রিয় এই পর্যটনকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে একাধিক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “এই এলাকাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, এটি আলেম-ওলামা, মুরুব্বি ও যুব সমাজের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। এখানে যারা আসেন, তাদের অনেকে মদ্যপান ও অশ্লীল কার্যকলাপে লিপ্ত হন, ফলে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়।”

পর্যটকদের উদ্দেশে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, “আজকের পর কেউ উৎমাছড়ায় আসবেন না। আপনারা নিজে যাবেন এবং অন্যদেরও জানিয়ে দেবেন এলাকাবাসী এই স্থানটি পর্যটনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।”

ছবি সোশ্যাল মিডিয়া

ভিডিওতে যুব জমিয়ত বাংলাদেশ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মুফতি রুহুল আমিন সিরাজীকেও বক্তব্য দিতে দেখা যায়। তিনি পর্যটকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের আমরা সম্মানের সাথে অনুরোধ করে বলছি—এই এলাকায় যেন আর কেউ ভ্রমণে না আসেন।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুফতি রুহুল আমিন সিরাজী বলেন, “ঈদের আগের দিন স্থানীয় আলেম-ওলামা, মুরুব্বি ও যুব সমাজ মিলে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই ‘প্রজনন স্পটটিকে’ বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমরা রবিবার বিকালে পর্যটকদের সম্মানের সাথে অনুরোধ করে বলেছি যেন ভবিষ্যতে এখানে আর না আসেন।”

ঘটনার বিষয়ে উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, “ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওর মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে স্থানীয় কিছু যুবক ও সংগঠনের নেতারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে শুনেছি।”

উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্র একটি সরকারি স্বীকৃত স্থান নয়, তবে বিগত কয়েক বছর ধরে এটি স্থানীয় ও বাইরের পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানে কেউ আইন অমান্য করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে এভাবে পর্যটকদের বাধা দেওয়া ও এলাকা ‘বন্ধ’ ঘোষণা করার উদ্যোগ আইনসিদ্ধ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসচেতনতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আইনশৃঙ্খলা ও পরিকাঠামো রক্ষাও অপরিহার্য। কোনও সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে কি না, সে বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও সংলাপ প্রয়োজন।

📢 আপনার মতামত দিন—উৎমাছড়ার মতো জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থানে পর্যটন বন্ধের একতরফা সিদ্ধান্ত কি গ্রহণযোগ্য? নাকি প্রয়োজন সমন্বিত নীতিমালা ও স্থানীয়-প্রশাসনিক সংলাপ?

#উৎমাছড়া #সিলেটপর্যটন #কোম্পানীগঞ্জ #স্থানীয়বাধা #পর্যটননিরুৎসাহ #আলোচনায়উৎমাছড়া