Home Uncategorized সুস্থ কিডনির জন্য যে অভ্যাসগুলো এখনই গড়ে তুলতে হবে

সুস্থ কিডনির জন্য যে অভ্যাসগুলো এখনই গড়ে তুলতে হবে

হেলথ ডেস্ক:

মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে কিডনি অন্যতম। প্রতিদিন প্রায় ৫০ গ্যালনের মতো রক্ত ছেঁকে শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এই জোড়া অঙ্গটি। কিন্তু অজ্ঞাতে নানা বদভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে অনেকের কিডনি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিডনি রোগ একবার ধরা পড়লে তা অনেক সময় আজীবনের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই শুরু থেকেই কিডনি ভালো রাখার চেষ্টা করা জরুরি। নিচে তুলে ধরা হলো কিডনি সুস্থ রাখার কিছু কার্যকর পরামর্শ।

১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন

কিডনির সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করুন। এটি কিডনিতে জমে থাকা বর্জ্য দ্রুত ছেঁকে ফেলে এবং পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

২. লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন

অতিরিক্ত লবণ কিডনির উপর চাপ বাড়ায় এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে। যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের অন্যতম কারণ, তাই লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, জুস ইত্যাদি এড়িয়ে চলাই ভালো।

৩. নিয়মিত রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার পরীক্ষা করুন

ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের প্রধান দুটি কারণ। তাই যাদের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।

৪. ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা

অনেকে সামান্য ব্যথাতেও ঘনঘন ব্যথানাশক খেয়ে ফেলেন, যা কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘমেয়াদে এসব ওষুধ কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করবেন না।

৫. শরীরচর্চা ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

নিয়মিত হাঁটাচলা, ব্যায়াম ও শরীরচর্চা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি, অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে, তাই স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা জরুরি।

৬. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন

ধূমপান কিডনির রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয় এবং কিডনি ক্ষয় করে। একইভাবে মদ্যপানও কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট করতে পারে। তাই এ দুটি অভ্যাস থেকে দূরে থাকা উত্তম।

৭. পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ

ঘুম কম হলে এবং মানসিক চাপ বেশি থাকলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৬–৮ ঘণ্টা ঘুমানো ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখা দরকার।


পরিশেষে: কিডনির সমস্যা ধীরে ধীরে হলেও ভয়ানক হতে পারে। তাই প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাস ও জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই কিডনি সুস্থ রাখা সম্ভব। সময়মতো পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং সচেতন জীবনাচারই হতে পারে কিডনি ভালো রাখার মূল চাবিকাঠি।

 

📢 এই প্রতিবেদনটি বন্ধু ও পরিবারকে শেয়ার করুন, যাতে তাঁরাও কিডনি রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন।