বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া: কুমারখালী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সদ্য বিবাহিতা রেখা পারভিন (১৮) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের ময়লার ভাগাড় থেকে। কম্বলে মোড়ানো লাশ উদ্ধার হয়েছে বুধবার সন্ধ্যায়। শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সুরতহাল প্রস্তুতকারী কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক আলমগীর হোসেন প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।
রেখা নন্দলালপুর ইউনিয়ন এর বুজরুক বাঁখই গ্রামের ঝাড়ু বিক্রেতা আব্দুর রহিম এর মেয়ে। তিনি জানান, ‘১৮ নভেম্বর রেখার পছন্দের পাত্র হাফিজুর রহমানের সাথে তার বিয়ে হয়। কিন্তু এ বিয়েতে আমার বড় জামাই আওলাদ হোসেনের মত ছিল না। তার চরম আপত্তি ও বিরোধিতা সত্ত্বেও পারিবারিক সিদ্ধান্তেই এই বিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আওয়ালাদ খুব রেগে যায়। এমনকি রেখাকে বকাঝকাও করে। এখন কিসের থেকে কী হয়েছে তা আল্লাহ জানে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। জামাই হাফিজুর মাগুরায় চাকরি করে। রেখাকে শ্বশুর বাড়ি উঠিয়ে দেয়া হয়নি।
বুধবার সকাল ৮ টার দিকে রেখা কলেজে যাবার কথা বলে বাবার কাছ থেকে ২০ টাকা চেয়ে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। সারাদিনে বাড়িতে না ফিরলে রহিম মনে করেন বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে থাকতে পরে রেখা। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া হাউজিং থেকে মরদেহ উদ্ধারের খবর শুনে মর্গে গিয়ে তার মেয়ের লাশ সনাক্ত করেন। তার মেয়ের হত্যার সাথে কে বা কারা জড়িত থাকতে পারে এ ব্যাপারে কিছুই জানেননা বলে জানান।
নিহতের স্বামী হাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় এক বছর আগে ফোন কলের মাধ্যমে রেখার সাথে আমার পরিচয় হয়। রেখার সাথে ইমো ফোন কলের মাধ্যমে যোগাযোগ হতো। দূরে থাকায় সরাসরি দেখা সাক্ষাতের সুযোগ ছিলনা। কয়েক মাস আগে রেখা জানায়, তাকে বড় দুলা ভাই আওলাদ হোসেন উত্যক্ত করে। বিয়ের জন্য চাপ দেয়। পরে জন্ম নিবন্ধন সূত্রে প্রায় আড়াই মাস বয়স কম থাকলেও কুষ্টিয়াতে নোটারী পাবলিক থেকে পারিবারিক হলফনামা করে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু বিয়ের ১০ দিন পর রেখার বড় দুলাভাই আওলাদ হোসেন আমাদের বিয়ের ঘটনা জেনে যাওয়ার পর থেকেই চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিনি রেখাকে নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। এ ঘটনায় আগামী সপ্তাহেই রেখাকে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। তার আগেই এ ঘটনা ঘটে গেলো।
তবে অভিযুক্ত আওলাদ হোসেন বলেন, ‘রেখা ফোনে মেহেদী ও হাফিজুরসহ বিভিন্ন ছেলেদের সাথে কথা বলতো বলে আমি রাগারাগি করতাম। তবে ওর বিয়েতে বিরোধিতা করেছি এমন অভিযোগ সঠিক নয়। ওদের বিয়ে কবে হয়েছে তা আমি জানিনা বা আমি সেখানে উপস্থিতও ছিলাম না। রেখা কখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে কলেজে যায় বা বিকেলে বাড়ি ফেরেনি সেই বিষয় আমার জানা ছিলনা। ওই সময় আমি প্রতিদিনের মতো অফিসে ডিউটিতে ছিলাম।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) সোহেল রানা বলেন, বুধবার রাতে হাউজিং এলাকায় কম্বল মোড়ানো এক নারীর মরদেহ পড়ে আছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।