মো. আজিজার রহমান, খানসামা (দিনাজপুর): চিরিরবন্দর উপজেলায় এক শিবিরকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন, নিহতের বড় ভাই নাজমুজ শাহাদাত। উক্ত মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়াও আরো মামলায় ৩০০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
নিহত মোজাহিদুল ইসলাম (১৪) দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি বেশার পণ্ডিতপাড়া এলাকার আতাউর রহমানের ছেলে। শনিবার দুপুরে চিরিরবন্দর থানায় দায়ের করা ওই মামলার বাদী হয়েছেন তার বড় ভাই নাজমুজ শাহাদাত। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান দিনাজপুর-৪ (খানসামা ও চিরিরবন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্যকে প্রধান আসামি করে হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক অর্থমন্ত্রীর ভাই শামীম হাসান, খানসামা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আযম চৌধুরী লায়ন, চিরিরবন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম, শাফিয়ার রহমান, নুর ইসলাম নুরু, আহসানুল হক, আজিমউদ্দিন সরকার, মোসলেমউদ্দিন প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সারাদেশে হরতাল ও মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে। আগের দিন সন্ধ্যায় হরতালের সমর্থনে রানীরবন্দর এলাকায় জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল বের করে। মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দেয় ও লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল, দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ অতর্কিত হামলা চালায়। সেই ঘটনায় গুরুতর আহত হন মোজাহিদুল ইসলাম। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাত ১২টায় তার মৃত্যু হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত হয়। এ ঘটনায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়।
মামলার বাদী নাজমুজ শাহাদাত মুঠোফোনে বলেন, তাঁদের বাবা খানসামা উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ছিলেন। তিনি নিজেও ইছামতি ডিগ্রি কলেজ শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি। তাঁর ভাই মোজাহিদুল ইসলাম শিবিরের কর্মী ছিল। এতদিন আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকির কারণে আমরা আসামীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করতে পারিনি। পাল্টা নামে বিভিন্ন সময় ৩২টি এবং তাঁর বাবার নামেও ২৮টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২০১২ সালে এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।