বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকাঃ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সব আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলেও জোটের খাতিরে সমন্বয় করা হবে। তিনি বলেন, এর আগেও ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। জোটগতভাবে নির্বাচনের স্বার্থে এবারও সমন্বয় করা হবে।
সোমবার সচিবালয়ে সিনেমা হল মালিকদের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এসব কথা জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করেছিলাম। সেবারও প্রায় ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরে মহাজোটের মধ্যে সমন্বয় করা হয়েছিল। গতবারও প্রায় সব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল, পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল। এখনো ২৯৮ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করব সেটি আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া অন্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয়, সেটিও করা হবে। অতীতেও করা হয়েছে এভাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ৭২ জন বাদ পড়েছেন, প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়ে থাকে। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিল, যারা জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে গেছে বা যারা যে কোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছে, তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সেই কারণেই এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছে। বাদ পড়াটা স্বাভাবিক। সেখানে কে মন্ত্রী বা বড় নেতা সেটি বিষয় নয়, জনপ্রিয়তা যার নেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের পক্ষ থেকে সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা নানাভাবে তদন্ত করাচ্ছিলেন। সেই রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তার নিরিখে, দলের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে এটি বিবেচনা করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এবার বহু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। আজকেও বেশ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। বহু বিএনপি নেতা তৃণমূল বিএনপির নেতৃত্বে কিংবা অন্যান্যভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পদক্ষেপ নিয়েছে, অনেকে ঘোষণা দিয়েছে। জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ হবে বলে আমরা আশা করছি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- আমাদের দলের অনেকে অনেক সময় চায়, যেমন ২০১৪ সালে অনেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। তাদের সবাইকে পেনাল্টি দিতে হয়েছে দলকে। এবার সেই কথাটি মনে করিয়ে দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন; সেটা আমাদের দলের জন্য বলেননি- কেউ যদি প্রার্থী হতে চায় ছোটখাটো দল থেকে, এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি হতে চায়, তাদের নিরুৎসাহিত না করতে বলেছেন। তার মানে আমাদের দলকে বলেছেন, তা নয়।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কোন দল অংশগ্রহণ করল সেটার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ আছে কিনা। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে দমন-পীড়ন চলছে- এ বিষয়ে আপনার মতামত কী? জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিভিন্ন সময় বিবৃতি বিক্রি করে। তাদের নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। দেশে যেমন কিছু বিবৃতিজীবী আছে, আন্তর্জাতিকভাবেও কিছু বিবৃতিজীবী আছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এত যে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হচ্ছে, সেটি যখন বিবৃতিতে অনুপস্থিত থাকে, অন্যটাকে মুখ্য করা হয়; এ বিবৃতিজীবীদের নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। এটার কোনো গুরুত্ব নেই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যেমন বিবৃতি দেয় যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য। গাজায় নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড নিয়ে চুপ থাকে আর বাংলাদেশে কাউকে ঘুসি মারলেও বিবৃতি দেয়, এসব বিবৃতি নিয়ে কথা বলতে চাই না। এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নেই।