আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ওড়িশার গজপতি জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে ঘটেছে এক ভয়াবহ ঘটনা। দিনের আলো ফোটার আগেই আগুনে ভস্মীভূত হয়েছেন ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। অভিযোগ, তিনি রাতের অন্ধকারে ধর্ষণ করেছিলেন ৫২ বছর বয়সী এক বিধবাকে। সেই অভিযোগ থেকেই জন্ম প্রতিশোধের। পরিণতিতে, জ্বলন্ত আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে ৩ জুন রাতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন গভীর রাতে বৃদ্ধের ঘরে চুপিসারে ঢুকে পড়েন কয়েকজন মহিলা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। পরে তাঁর দেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। কয়েক কিলোমিটার দূরে জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় শুধু হাড় এবং ছাই।
পরদিন বৃদ্ধের পরিবার নিখোঁজ ডায়েরি করে। তদন্তে নেমে একে একে সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, ওই বৃদ্ধ শুধু ওই বিধবাকেই নয়, এর আগেও গ্রামের আরও অন্তত পাঁচজন মহিলার ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউই কখনও মুখ খোলেননি।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর মোহনা থানার পুলিশ ৮ জন নারীসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, যাঁরা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন, তাঁদের অনেকেই ওই বৃদ্ধের দ্বারা অতীতে নির্যাতিত হয়েছিলেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসন্ত শেঠি জানিয়েছেন, ‘ওই বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। অভিযুক্তদের অধিকাংশই স্থানীয় মহিলা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিনের নির্যাতনের প্রতিবাদেই এই পদক্ষেপ।’
পুলিশ আরও জানায়, অভিযুক্ত নারীরা আগে কখনও থানায় গিয়ে অভিযোগ জানায়নি। এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কেন তাঁরা আইনকে না ডেকে নিজেদের হাতে তুলে নিলেন বিচার? গ্রামে এখন আতঙ্ক এবং ক্ষোভ—একদিকে আইন ভাঙার দায়, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে মুখ বুজে সহ্য করা যন্ত্রণা।
তদন্ত চলছে। পুলিশ চেষ্টা করছে মৃত বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ওঠা পুরনো অভিযোগগুলির সত্যতা যাচাই করতে। পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে আর কারা ছিল।