২ লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত আগামী সপ্তাহ থেকে
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করে গঠিত নতুন ব্যাংক ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর)। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ব্যাংকটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরপরই আগামী সপ্তাহ থেকে একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকদের দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংক
এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক—এই পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হয়ে এখন ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
আমানত ফেরত ও গ্রাহক সুবিধা
জানা গেছে, একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের আমানত ফেরতের বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট স্কিম ঘোষণা করা হবে। শুরুতে আমানত বীমা তহবিল থেকে গ্রাহকদের দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করা হবে। আমানতকারীদের বাকি টাকা ধাপে ধাপে ফেরত দেওয়া হবে। ওই স্কিমে টাকা তোলার পদ্ধতি এবং মুনাফার হারের বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।
চেয়ারম্যানের বক্তব্য ও প্রস্তুতি
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারি মালিকানায় একটি ইসলামী ব্যাংক চালু হওয়া জাতির জন্য সুসংবাদ। ব্যাংকটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে টেকনিক্যাল টিম কাজ করছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হবে আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা।’
ইতোমধ্যে রাজধানীর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় প্রস্তুত করা হয়েছে, যা গতকাল পরিদর্শন করেন চেয়ারম্যান। শিগগিরই ব্যাংকটির প্রথম পরিচালনা পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
মূলধন ও সরকারি সহায়তা
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন হিসেবে গত সোমবার ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আমানতকারীদের শেয়ার থেকে সংস্থান করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্যাংকটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে লাভজনক অবস্থায় ফিরলে সরকার মুনাফার অর্থ পাবে। ব্যাংকটি স্বাভাবিক কার্যক্রমে সক্ষম হলে তিন বছর পর সরকারের হাতে থাকা ২০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
অনুমোদন প্রক্রিয়া
গত রোববার গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে এক বিশেষ পর্ষদ সভায় ব্যাংকটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সোমবার এটিকে তপশিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসেও ব্যাংকটি নিবন্ধিত হয়েছে। তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বিভিন্ন সরকারি তহবিল এই ব্যাংকে রাখা হবে এবং ঋণ আদায়ে জোর দেওয়া হবে।










